জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-২) মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই অভিযোগে তার স্ত্রী সাহানা পারভীনের নামেও পৃথক মামলা করেছে সংস্থাটি। গতকাল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলা দুটি করেন সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণী অনুযায়ী মোবারক হোসেনের ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৫ টাকা জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। আর সাহানা ও মোবারক পরস্পর যোগসাজশে একে অপরকে সহযোগিতার মাধ্যমে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৫২ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তিনি দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে নিজের নামে স্থাবর ও অস্থাবরসহ মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৫৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। এ সম্পদের বিপরীতে চাকরিকালীন বিভিন্ন খাত হতে আয় থেকে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ব্যতিরেকে সঞ্চয় ও ঋণ গ্রহণসহ মোট বৈধ উৎসের পরিমাণ পাওয়া যায় ৬৯ লাখ ৩৯ হাজার ২০৮ টাকা। এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য বৈধ উৎসের চেয়ে অতিরিক্ত ৪১ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪৫ টাকা আয়ের কোনো বৈধ ও গ্রহণযোগ্য উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। সাহানা পারভীনের নামে করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সম্পদবিবরণীতে তিনি নিজ নামে ৬০ লাখ ৯০ হাজার ৫৬০ টাকা মূল্যের স্থাবর এবং ১ কোটি ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ৭০১ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্যসহ মোট ১ কোটি ৯৯ লাখ ৭৫ হাজার ২৬১ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। তবে সাহানা পারভীনের নামে বর্ণিত সময়ে আয় থেকে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় বাদ দিয়ে নিট সঞ্চয়সহ অন্যান্য বৈধ প্রাপ্তিসহ বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৪১ লাখ ২ হাজার ১০৯ টাকা। এক্ষেত্রে সাহানা পারভীনের নামে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৫২ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ভোগ-দখলে রাখার সত্যতা পাওয়া যায়। দুদক সূত্র জানায়, মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে মহাখালী জোন-৪ অথরাইজড অফিসার থাকাকালীন মিরপুর-১ ও ১০, মার্কেট পরিচালনা কমিটি, বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানি ও বাড়ির মালিকদের উচ্ছেদ অভিযানের চিঠি দিয়ে এবং উচ্ছেদের ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি অথরাইজড দায়িত্ব থাকা অবস্থায় নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে শত শত প্ল্যান পাস করে দিয়েছেন। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাঁচ বছর আগে দুদক মোবারক হোসেনকে ও তার স্ত্রীর সম্পদ অনুসন্ধানের বিষয়ে নোটিস জারি করে।