ছাগলকান্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ১ হাজার ১৯ শতক জমিসহ অন্যান্য সম্পত্তি জব্দের (ক্রোক) আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
দুদকের প্যানেল আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, মতিউরের সম্পত্তি জব্দের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন। শুনানি শেষে আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। জব্দের আদেশ দেওয়া সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে বরিশালের মুলাদী উপজেলায় মতিউরের নামে থাকা ১১৪ শতাংশ জমি। তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে থাকা নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মারজাল ইউনিয়নের ৫২২.৫২ শতাংশ জমি ও রাজধানীর ভাটারায় ২ হাজার ৫৪০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। এ ছাড়া মতিউরের ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে থাকা ২৭৫.৮৭৫ শতাংশ জমিও জব্দ করা হয়েছে। জব্দের আদেশ তালিকায় রয়েছে নরসিংদীর রায়পুরায় থাকা মতিউর-লায়লা দম্পতির মেয়ে ফারজানা রহমান ইপ্সিতার ১০৬.৫৬ শতাংশ জমি ও ঢাকার ভাটারায় ৫ কাঠা জমির ওপর বহুতল ভবন। মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিভলীর নামে থাকা ধানমন্ডির জিগাতলার একটি প্লট এবং ভাটারায় ৫ কাঠার প্লট। এসব স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা মোট জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০.১৯ একর বা ১ হাজার ১৯ শতাংশ। দুদকের আবেদনে বলা হয়-মতিউর রহমানের সম্পত্তির অনুসন্ধানকালে জানা যায়, তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। যেটি করতে পারলে অত্র অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা দায়ের ও বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থাবর সম্পত্তিগুলো ক্রোক (জব্দ) করা একান্ত প্রয়োজন।
ছাগলকান্ডে আলোচিত ইফাতের বাবা জাতীয় রাজস্ব রোর্ডের সদস্য মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারবার অনুসন্ধান করেছে দুদক। প্রতিবারই অনুসন্ধান পর্যায় থেকে শেষ হয়েছে কার্যক্রম। সম্প্রতি মতিউরের বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। সূত্র জানান, এ পর্যন্ত আলোচিত এই কর্মকর্তা ও তার স্বজনদের নামে থাকা ৬৫ বিঘা (২ হাজার ১৪৫ শতাংশ) জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এব দুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে। লায়লার নামে প্রায় ২৮ বিঘা জমি ও পাঁচটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার মিরপুরে একটি ভবনেই রয়েছে চারটি ফ্ল্যাট। কলেজ শিক্ষক লায়লা কানিজ বর্তমানে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক।