শুক্রবার, ৫ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশই সিদ্ধান্ত নেবে

রাজনৈতিক বিশ্বাস আরও গভীর করতে আগ্রহী চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

তিস্তা প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশই সিদ্ধান্ত নেবে

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন তিস্তা প্রকল্পের দ্রুত বাস্তবায়ন চায়। এ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশই সিদ্ধান্ত নেবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবে তিস্তা  প্রকল্প নিয়ে আমরা কাজ করেছি। তবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কে করবে, তা বাংলাদেশ সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা চাই, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক, এটি উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্যই প্রয়োজন। প্রকল্পটি নিয়ে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে কয়টি চুক্তি হবে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, তা জানতে হলে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে গঠনমূলক আলোচনা হবে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, এফটিএ, ফাইন্যান্সিয়াল, মিডিয়া, শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ে প্রাধান্য পাবে। বাংলাদেশের রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতা দিতে চায় চীন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরকালে এ বিষয়ে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় বাংলাদেশ-চীন একযোগে কাজ করছে। ইউক্রেন, মধ্যপ্রাচ্যে একই নীতি, বিশ্বশান্তি ও স্থিতিশীলতায় একই নীতি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে, চীন এটিই প্রত্যাশা করে। বাংলাদেশের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে চীনের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ইয়াও ওয়েন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশ-চীন উভয়ের জন্যই চ্যালেঞ্জ। মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে চীন কাজ করছে। সেখানে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ চলছে, তবে আমরা থেমে নেই। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিকাব প্রেসিডেন্ট নূরুল ইসলাম হাসিব ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।

রাজনৈতিক বিশ্বাস আরও গভীর করতে আগ্রহী চীন : বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক ‘রাজনৈতিক বিশ্বাস’ আরও গভীর করতে আগ্রহী চীন। গতকাল চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক ঘোষণায় এ কথা বলেছেন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে জানান, চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ থেকে ১০ জুলাই চীনে সরকারি সফরে যাবেন।

বাংলাদেশ সরকারের নতুন মেয়াদ শুরু হওয়ার পর এবং চীন সফরের পাঁচ বছর পর এটিই হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম চীন সফর। সফরকালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে স্বাগত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ও আলোচনা করবেন শেখ হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতার নথি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। কীভাবে ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে আরও গভীর করা যায়, পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা যায়, পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে দুই দেশের নেতারা গভীরভাবে মতবিনিময় করবেন।

চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আয়োজিত শীর্ষ সম্মেলনেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, চীন ও বাংলাদেশ ভালো প্রতিবেশী, ভালো বন্ধু এবং ভালো অংশীদার। ৪৯ বছর আগে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে, দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে সম্মান ও সমতার আচরণ করেছে। দুই দেশ পারস্পরিকভাবে সহযোগিতায় নিযুক্ত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর