সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
খুনের শিকার ইউপি চেয়ারম্যানরা

খুলনায় যে কারণে টার্গেট ছিলেন রবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় যে কারণে টার্গেট ছিলেন রবি

নিজ এলাকায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় ছিলেন দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত খুলনার ডুমুরিয়া শরাফপুর ইউনিয়নে তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শেখ রবিউল ইসলাম রবি (৪২)। ইউপি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে       রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে তিনি টার্গেটে পরিণত হন বলে পরিবারের দাবি। এদিকে গতকাল আছরবাদ শরাফপুরের ভুলবাড়িয়া গ্রামে নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে খুলনার ভাড়াবাড়ি ফেরার পথে খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে গুটুদিয়া এলাকায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শরাফপুরে নিজের বাড়ি থাকলেও তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে খুলনার নিরালা আবাসিক এলাকার ভাড়াবাড়িতে বসবাস করতেন। ২০১৫ সালেও তিনি একবার হামলার শিকার হয়েছিলেন। নিহত চেয়ারম্যান রবির শ্যালক মনির হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘তিনি (রবি) এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। তার এই জনপ্রিয়তাই কাল হয়েছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’ মনির হোসেন আরও জানান, গত জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি টার্গেটে পরিণত হন। তিনি পরপর তিনবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী ইউপি নির্বাচনেও তিনি প্রার্থী হবেন। এসব কারণেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। জানা গেছে, শরাফপুর ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার বিএনপি-জামায়াত ঘরানার। ২০১১ সাল থেকে ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রবি তিনবার আওয়ামী লীগের বাঘা বাঘা প্রার্থীদের হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সক্রিয় সদস্য হলেও দলের মধ্যে তার বিরোধী পক্ষ ছিল। বিএনপি-জামায়াতের সমর্থনে বারবার দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করায় ব্যক্তিগত শত্রুতাও তৈরি হয়। সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে খুলনা-৫ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমানে ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে সমর্থন করেন রবি। শরাফপুর ইউনিয়নে বিএনপি-জামায়াত ভোট বেশি হওয়ায় নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিপক্ষে এখানে বেশি ভোট পড়বে বলে বিশ্লেষকরা ধারণা করেন। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায়, নৌকার পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে। একইভাবে উপজেলা নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের অনুসারী চেয়ারম্যানপ্রার্থী এজাজ আহম্মেদ বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত এলাকায় বেশি ভোট পায়। ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, হত্যাকান্ডের সম্ভাব্য কারণগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হত্যাকান্ডের পর আসামিদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত থানায় মামলা হয়নি। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর