শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

তিস্তায় কি দেওয়ার মতো পানি আছে, প্রশ্ন মমতার

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

তিস্তায় কি দেওয়ার মতো পানি আছে, প্রশ্ন মমতার

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির প্রশ্ন, তিস্তায় কি পানি আছে যে বাংলাদেশকে পানি দেবে? মমতা এও অভিযোগ করেছেন যে, বাংলাকে না জানিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে ফারাক্কা চুক্তি নবায়ন করতে চাইছে, একই সঙ্গে তিস্তার পানিও দিতে চাইছে। মমতা সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সচিবালয় ‘নবান্ন’য় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর যে কথা হলো আমাদের কাউকে জানানো হলো না। খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যাই হোক, আবার বলছে তিস্তার পানি দিয়ে দেব। তাহলে তো আমাদের রাজ্যের উত্তরবঙ্গের মানুষ খাবার পানি পাবে না। বর্ষার পানি দেখে যেন আমরা পানির কথা না ভাবি।’ এ সময় সিকিমে তিস্তা নদীর ওপর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘সিকিমের ওখানে তিস্তার ওপর ১৪টা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছে তাতে সব পানি টেনে নিয়েছে। যখন সিকিম ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প করল, তখন কেন্দ্রীয় সরকারের সযত্ন হওয়া উচিত ছিল। ওরা জানে যে সিকিম বা অরুণাচল সীমান্ত কতটা ভয়ানক আমাদের দেশের জন্য। কিন্তু সরকারের কোনো মনিটরিং সিস্টেম নেই। আমরা বারবার বিষয়টি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যার জন্য মানুষকে আজও সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।’ মমতা ব্যানার্জি বলেন, ‘গঙ্গার ভাঙন রোধের বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের দেখার কথা। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তারা দেখছে না। গঙ্গার ভাঙন রোধে তারা এক পয়সাও খরচ করেনি। ফারাক্কাতেও ড্রেজিং করেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে যখন আমাদের চুক্তি হয়েছিল তখন কথা ছিল বাংলাদেশের দিকে যে পানিটা যাচ্ছে সেটাকে যাতে রিভাইভ করা হয়, যাতে আমাদের এখানে কোনো সমস্যা তৈরি না হয়। ড্রেজিং করা, ভাঙন রোধ, এলাকার উন্নয়নের জন্য ৭০০ কোটি রুপির একটা প্যাকেজ তৈরি হয়েছিল।

আমি তখন লোকসভা সদস্য ছিলাম, আমি ঘটনাটা জানতাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই অর্থ দেয়নি। উপরন্তু আমাদের না জানিয়ে আবার বলছে ফারাক্কা চুক্তি পুনর্নবীকরণ করবে।’ তার অভিমত ফারাক্কায় ড্রেজিং না করার ফলে শুধু বাংলায় ক্ষতি হয় না, বিহারও বন্যায় ভেসে যায়। কিন্তু সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আমরা।’

সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের ওপর দিয়ে বয়ে চলা আত্রেয়ী নদীর ওপর বাংলাদেশ তাদের সীমানায় যে বাঁধ দিয়েছে তার উল্লেখ করে মমতা বলেন, এ বাঁধটা করার সময় আমাদের জানানো হয়নি। আর তাতে কিন্তু অনেক অনেক মানুষ খাবার পানি পাচ্ছে না। পানির একটা তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। আমি এ বিষয়টি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অনেকবার বলেছি। তাছাড়া পূর্বের ভারত-বাংলাদেশ যে বৈঠকগুলোতে আমাকে ডাকা হতো, সেখানে আমি বারবার এ বিষয়টি উত্থাপন করেছি। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

মমতার অভিমত ‘রাজ্যের জলপাইগুড়ি শহরের মানুষ নিশ্চয়ই জানে যে আগে করোলা নদীর পানিতে কীভাবে ভেসে যেত। আমরা ২০ কোটি রুপি খরচ করে করোলা নদীর ওপর প্রজেক্ট তৈরি করে ভাঙনটা কিছুটা রোধ করতে পেরেছি। কিন্তু ভুটান থেকে পানি চলে আসার ফলে আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি ভেসে যায়। তার সঙ্গে যুক্ত হয় বৃষ্টির পানি। সবকিছু মিলেমিশে বন্যায় পরিণত হয়। সেই কারণে আমরাই বেশি ভুক্তভোগী।’

সর্বশেষ খবর