বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্ত্রীর বুদ্ধিতে কেলেঙ্কারিতে নোমান!

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রশ্নপত্র ফাঁস কেলেঙ্কারিতে জড়িত সাবেক সেনা সদস্য মো. নোমান সিদ্দিকী যত অপকর্ম করতেন সবই তার স্ত্রী সাফিয়া সুলতানা স্বর্ণার বুদ্ধিতে। এ তথ্য দিয়েছেন নোমানের স্বজনরা। তারা জানান, প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় ২ নম্বর আসামি নোমান বিয়ের পর থেকে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। সেনাবাহিনীতে থাকতে তার তেমন কোনো অর্থ বা সম্পত্তি ছিল না। অবসরে গিয়ে অপকর্মে জড়িয়ে সম্পদ গড়েছেন। নোমানের বাড়ি রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড চর মেহের গ্রামে। তার বাবা মৃত আবু তাহের মিয়া। তারা তিন ভাই। নোমান সবার ছোট। বড় ভাই রামদয়াল বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মো. ফারুক ও ভগ্নিপতি মেছবাহ উদ্দিন জানান, ১৯৯৬ সালে এসএসসি পাস করে নোমান। ১৯৯৮ সালে সেনাবাহিনীতে সাধারণ সৈনিক পদে যোগদান করেন।

চাকরি জীবনে লাইবেরিয়ায় জাতিসংঘ শান্তি মিশনে ছিলেন। ২০০৭ সালে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা শহরের বিদ্যুৎ কর্মকর্তা শাহাব উদ্দিনের মেয়ে সাফিয়া সুলতানা স্বর্ণাকে বিয়ে করেন। স্বর্ণা ঢাকার মিরপুরে শিক্ষা অধিদফতরে চাকরি করতেন। বর্তমানে তিনি গৃহিণী। বিয়ের পর থেকে পরিবারের কারও সঙ্গে তেমন কোনো সম্পর্ক নেই নোমানের। বাবা আবু তাহের মিয়া বেঁচে থাকতে মাঝেমধ্যে গ্রামের বাড়িতে এলেও বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে বাড়িতে আসেন না। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকায় বাস করছেন। তার নামে যত সম্পত্তি রয়েছে তার চেয়ে বেশি সম্পত্তি স্ত্রীর নামে ঈশ্বরদীতে থাকতে পারে বলে স্বজনদের সন্দেহ।

সরেজমিনে নোমান সিদ্দিকীর গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে দেয়ালঘেরা একটি টিনের ঘর ও ভাঙা একটি ঘর রয়েছে। দেয়ালঘেরা টিনের ঘরটি তার বাবার করা। তারা তিন ভাই এ ঘরে বাস করেন। বাড়ির পশ্চিমে মেঘনা নদী। বাড়ির পরিবেশ জরাজীর্ণ। গ্রামে তার কোনো সম্পত্তির হদিস পাওয়া যায়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী জানান, নোমান সিদ্দিকী তার প্রতিবেশী। দেশে তার একটি মাছ চাষের পুকুর ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি আছে বলে তার জানা নেই। নোমানের এত সম্পদ ও জাল জালিয়াতির কথা তিনি এর আগে কখনো শুনেননি। ভাইবোন ও ভগ্নিপতিদের কারও সঙ্গেই তার সম্পর্ক ভালো ছিল না। গ্রামের স্কুলশিক্ষক সাহাব উদ্দিন ও প্রবীণ সমাজসেবক আফতাব উদ্দিন জানান, ঈদে নোমান সিদ্দিকী বাড়িতে এলে ২-৩ দিন থেকে চলে যেতেন। কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তবে স্বাভাবিক চলাফেরা করতেন। তার বাবা মৃত আবু তাহের ছিলেন সাধারণ মানুষ। তিনি কৃষি কাজ করতেন। মেঝ ভাই মো. সালাউদ্দিন সেনাবাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার। নোমান সিদ্দিকী ভাইদের মধ্যে ছোট। তার ভাই ওমর ফারুক জানান, পারিবারিকভাবে নোমানের সঙ্গে পরিবারের কারও যোগাযোগ নেই। বিয়ের পর থেকে সে ঢাকায় থাকেন। তার তিন সন্তান রয়েছে। তার বাবা মারা যাওয়ার আগ থেকে পারিবারিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কখনো বাড়িতে এলে একা থাকতেন।

সর্বশেষ খবর