শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা
হার্ডলাইনে যাচ্ছে সরকার

কোটা সংস্কার প্রয়োজন, অযৌক্তিক ব্লকেড : ছাত্রলীগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সরকারি চাকরির সব গ্রেডে কোটার সংস্কার চেয়ে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কোটা ব্যবস্থার একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। তবে সংগঠনটি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, শিক্ষার্থীদের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি গণ দুর্ভোগ ছাড়া কিছু নয়। গতকাল সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। এতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন লিখিত বক্তব্য পাঠ করন। সাদ্দাম বলেন, কোটা ব্যবস্থায় একটি যৌক্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান ও সংস্কার আনয়ন করা এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে কোনো অবরোধ বা জিম্মি পরিস্থিতি তৈরি করে ‘স্পট ডিসিশন’ গ্রহণ করা নয়। বরং একটি সমন্বিত রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে, বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রকাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌক্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থায়ী সমাধান উদ্যোগ প্রয়োজন। কিন্তু তেমন কোনো সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান না জানিয়ে, এমনকি আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কেন এই অনিঃশেষ আন্দোলন।

শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে অনিঃশেষ অবরোধ কার্যক্রম পরিচালনা কোনোভাবেই দাবির সুষ্ঠু সমাধান নিয়ে আসতে পারে না। চলমান এইচএসসি পরীক্ষা, তীব্র দাবদাহ এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনায় সড়ক অবরোধ, নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রায় বাধা সৃষ্টি এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে তাদের অবিলম্বে ফিরে আসতে হবে। শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরে গিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ স্বাভাবিক রাখবে, এটিই সবাই প্রত্যাশা করে।

২০১৮ সালের পরিপত্র নিয়ে জানতে চাইলে সাদ্দাম বলেন, আমরা ২০১৮ সালের পরিপত্রের যৌক্তিক সংস্কার চাই। এ সময় ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের কারণে নারী, জেলা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের সুযোগ সংকুচিত হওয়ার কিছু তথ্য সাদ্দাম হোসেন তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের কোটা না মেধা স্লোগান নিয়ে তিনি বলেন, যেখানে সরকারি চাকরির প্রতিটি পরীক্ষার্থীকেই প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভা প্রতিটি ধাপ পার হয়ে আসতে হয় তাই ‘কোটা না মেধা’ স্লোগানটি একটি ভিত্তিহীন, কল্পনাপ্রসূত এবং উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা। এখানে মেধার বিপরীতে মেধার প্রতিযোগিতায় সমাজের অনগ্রসর অংশকে কিছুটা এগিয়ে দেওয়া হয় যা পুরোপুরি ন্যায় এবং সংবিধান সম্মত। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ কোনো বাধা দেবে কি না জানতে চাইলে সাদ্দাম বলেন, আমরা তাদের আন্দোলনকে স্বাগত জানিয়েছি। তবে আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থী সমাজকে জিম্মি করে জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করলে ছাত্রলীগ তা রুখে দেবে। আজ শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে এটিকেও হঠকারি সিদ্ধান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ অনান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর