শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

আলমগীরের কোচিং সেন্টারে যত রহস্য

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সহকারী পরিচালক এসএম আলমগীর কবিরের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার গয়ড়া সরদারপাড়া গ্রামে। ঢাকার মিরপুরে চাকরির কোচিং সেন্টার রয়েছে তার। বদলগাছীতে কোলাহাট বাজারে চাকরির কোচিং সেন্টার খুলেছিলেন তিনি। তার কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়ে এলাকার অন্তত ৯০ জন তরুণ ও যুবক সরকারি চাকরি পেয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত রবিবার ও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

জানা যায়, আলমগীরের বাবা আবুল কাশেম আগে দিনমজুর কৃষিশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বদলগাছীর কোলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন তিনি। জায়গীর থেকে কুষ্টিয়ার একটি কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। এক যুগ আগে পিএসসিতে যোগদান করেন আলমগীর। পদোন্নতি পেয়ে হন সহকারী পরিচালক। কোলাহাট বাজার সংলগ্ন গয়ড়া সরদারপাড়া গ্রামে তার বৃদ্ধ বাবা ও মা থাকেন। চার ভাই-বোনের মধ্যে আলমগীর সবার বড়। ছোট ভাই এস এম হুমায়ুন কবির শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গাড়ি চালক। ছোট বোন মিনা আক্তার রাজশাহী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাঁটলিপি মুদ্রাক্ষরিক কাম-কম্পিউটার অপারেটর। রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সরকারি বাসভবনে পরিবার নিয়ে থাকেন আলমগীর কবির। মিরপুরে জব কর্নার সাঁটলিপি অ্যান্ড কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নামে চাকরি প্রস্তুতি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন তিনি। কোলাহাট বাজারে ২০২৩ সালে মিরপুরের কোচিং সেন্টারটির শাখা খোলেন। আট-নয় মাস পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়।

কোলাহাট বাজারের মিম ভ্যারাইটি স্টোর নামের একটি প্রসাধনী দোকানের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চাকরির লাইনঘাটের জন্য এলাকায় আলমগীরের খুব নাম ডাক আছিল। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে শুধু কোলা ইউনিয়নে গত চার-পাঁচ বছরে ৮০-৯০ জন চাকরি পাইছে।

 

কোলা কলেজের প্রভাষক বেলাল হোসেন বলেন, কোলাহাট বাজার প্রত্যন্ত এলাকার একটা বাজার। এই বাজারে বছর দেড়েক আগে চাকরির প্রস্তুতির কোচিং সেন্টার গড়ে ওঠে। সেই কোচিং সেন্টারে পড়লে না কি সরকারি অফিসে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরি পাওয়া সহজ হবে। এলাকার অনেক বেকার তরুণ চাকরিও পাইছে। বুধবার আলমগীর কবিরের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার বাবা আবুল কাশেমের (৭৫) সঙ্গে। ছেলের গ্রেফতারের বিষয়ে বলেন, ‘শুনতেছি ছেলেকে না কি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কী কারণে হছে- কিছু জানি না। ছোট ছেলে ও মেয়ে জামাই থানা-পুলিশের কাছে দৌড়াদৌড়ি করোছে।’

আলমগীরের প্রতিবেশী এসএম আবদুর রউফ বলেন, ‘আলমগীর আমাদের গ্রামেরই ৪০-৫০ জন ছেলে-মেয়েকে চাকরি দিছে। এখন সেগুলা সঠিক পথে না অন্যায় পথে দিছে- আমরা কিছু বলতে পারব না। আলমগীরের আরেক প্রতিবেশী খোকা মিয়া বলেন, ‘আলমগীর এলাকায় তেমন সম্পদ করেনি। এখন ঢাকায় বাড়ি-গাড়ি কিংবা জমি-জমা কিনিছে না কি, তা বলতে পারব না।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর