রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে পুলিশের যানবাহনে হামলা, ভাঙচুর এবং মারধরের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেছে পুলিশ। এতে আসামি হিসেবে ‘অজ্ঞাতপরিচয় অনেক শিক্ষার্থী’ উল্লেখ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান এ মামলাটি করেন। এ ছাড়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে কি না, কারও ইন্ধন রয়েছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গতকাল দুপুরে মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কেউ যদি হাই কোর্টের নির্দেশনা না মেনে আন্দোলনের নামে সড়ক অবরোধ করে গাড়িতে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, তবে ধরে নিতে পারি অনুপ্রবেশকারীরাই এসব কাজ করছে। এসব বিষয় তদন্ত করছে ডিবি ও থানা পুলিশ।

হারুন অর রশীদ বলেন, কেউ যদি মনে করে আদালত মানবে না, পুলিশের কথা মানবে না; তাহলে আমাদের করার কী আছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে ক্ষমতা, আমরা সেটাই করব। কারণ, আন্দোলনরতরা যদি জানমালের ক্ষতি করে, সড়ক অবরোধ করে এবং মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যে যৌক্তিক কাজ, সেটাই করা হবে। তিনি বলেন, কোটা শুধু বাংলাদেশে নয়, অনেক দেশেই প্রচলন রয়েছে। কোটার বিরোধিতা করে কিছু লোক, কিছু শিক্ষার্থী রাস্তায় আন্দোলন করছেন। ইতোমধ্যে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সুপ্রিম কোর্ট সবার ভরসাস্থল। আদালতের নির্দেশনা সবার মেনে চলা উচিত। কিন্তু কয়েক দিন ধরে শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসে না গিয়ে বিভিন্ন সড়কে বসে সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটাচ্ছেন। অনেক জায়গায় গাড়িতে তারা হাত দিচ্ছেন। এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিবাদীরা বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি কাজে বাধা দেন ও সম্পত্তির ক্ষতি করেন। কোটা আন্দোলনকারীরা স্বেচ্ছায় আঘাত করেন, গতিরোধ, দাঙ্গা দমনকারী কর্তব্যরতদের প্রতি আক্রমণ ও বাধা দিয়ে ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি দেখান। গতকাল গণমাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন।  এদিকে আমাদের কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লায় কোটা আন্দোলনে বাধা দেওয়ার ভিডিও করায় এক শিক্ষার্থীকে হলে তুলে নিয়ে মারধরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। চারজনের নাম উল্লেখসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগটি দেওয়া হয়। শুক্রবারের ঘটনার পর শনিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় এ অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীর বাবা আলী আসাদ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন। নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র।

মামলায় প্রতিবেদন ২১ আগস্ট :  কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং মারধরের ঘটনায় শাহবাগ থানায় হওয়া মামলায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার প্রতিবেদন দাখিলের এ দিন ধার্য করেন।

সর্বশেষ খবর