শনিবার, ২০ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

অভিভাবকদের অনুরোধ শিক্ষার্থীদের ঘরে রাখুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিভাবকদের অনুরোধ শিক্ষার্থীদের ঘরে রাখুন

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে গেছে। কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, তারা সংঘাতে জড়িত নন। কাজেই শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষ লাশ চায়। এজন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে আন্দোলনে নিয়ে আসছে। কাজেই অভিভাবকদের অনুরোধ করব, শিক্ষার্থীদের ঘরে রাখুন। গতকাল বিকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক দিনে যে মানুষ হতাহত হলো, এর দায় কে নেবে? স্বার্থান্বেষী মহলের প্রচারণায় যে প্রাণহানি ঘটছে এর দায় কে নেবে? আমরা কোমলমতি ছাত্রদের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন। কোটা আন্দোলনকারী ছাত্ররা স্বীকার করে নিয়েছে আন্দোলনের নামে সহিংসতা হচ্ছে-যা কাম্য নয়। আমরাও ছাত্রদের সঙ্গে একমত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, ছাত্ররা সহিংসতা করছে না। তৃতীয় পক্ষ ঢুকে পড়ে সহিংসতা করছে। ছাত্রদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আপিল শুনানির দিন এগিয়ে আনা হয়েছে। হতাহতের ঘটনার বিচার করতে জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৃহস্পতিবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোজন করা হয়েছে। হামলা ও লুটপাট করেছে সন্ত্রাসীরা। বিটিভির মতো কেপিআই ইনস্টিটিউশনে সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে অগ্নিসংযোগ করেছে। সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গেছে। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নেই যেখানে কেপিআইভুক্ত এলাকায় হামলা করলে সরকার গুলি ছোড়ে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার অনেক ধৈর্য ধরেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে। ৫৩টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেতু ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি থানায় আগুন দেওয়া হয়েছে। মহাখালী ডেটা সেন্টারে আগুন দিয়ে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় আগুন দেওয়া হয়েছে। রেললাইন কেটে ফেলা হয়েছে। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই-আক্রমণকারী ও আক্রমণের শিকার এক নয়। কাজেই সবাইকে এক কাতারে মেলাবেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে আপনার সন্তানকে ঘরে রাখুন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।

তৃতীয় পক্ষ কারা? এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় পক্ষ হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। এদের ড্রেস দেখেন? চেহারা দেখেন? এরা কারা? ওরা সাধারণ ছাত্র? বিটিভির মতো জায়গায় সরকার কেন প্রটেকশন দিতে পারল না? জবাবে তিনি বলেন, প্রটেকশনের কথা বলছেন-আমরা পুলিশ পাঠিয়েছি, বিজিবি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কিছু কোমলমতি শিক্ষার্থী ছিল। তাদের ভুল বুঝিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীও ছিল। তখন যদি পুলিশ গুলি ছুড়ত তাহলে একজন সন্ত্রাসীও মারা গেলে বলা হতো হতাহত এতজন? সে কারণে গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়নি। জামায়াত-বিএনপির প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ছাত্রদের ঢাল করে অনেক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছেন। আমরা ধৈর্য ধরেছি। ভাবছেন সরকার শেষ হয়ে গেছে? সরকারের সামর্থ্যরে ৫ ভাগ শক্তিও প্রয়োগ করেনি। আমরা সর্বোচ্চ ধৈর্য ধরেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্ররা যখন মাঠ থেকে সরে যাবে, যখন শুধু সন্ত্রাসীরা মাঠে থাকবে, তখন পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশ রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে যেটা করে আমরাও তাই করব। এখন বিচার চাওয়ার নামে অনেকে উসকানি দিচ্ছে। সরকার তো জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে দিয়েছে। বিচার হবেই। যে-ই অপরাধী হোক ছাড় পাবে না। আক্রমণকারী ও আক্রান্ত এক নয়-এটা মাথায় রাখতে হবে। হতাহতের ঘটনায় আক্রমণকারীদেরই দায় নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর