রবিবার, ২১ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা

পোড়ানো হয়েছে গাড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলমান কোটাসংস্কার আন্দোলনের সংবাদ কাভার করতে গিয়ে গতকালও হামলার শিকার হয়েছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায় আন্দোলনকারীরা। ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা ও গাড়ি। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে গণমাধ্যমকর্মীর মোটরসাইকেল। চিটাগং রোডে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সংবাদপত্রবাহী তিনটি গাড়ি। গত কয়েকদিনে আন্দোলনের সংবাদ কাভার করতে গিয়ে শতাধিক সাংবাদিক আহত হয়েছেন। অনেকে হয়েছেন গুলিবিদ্ধ। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত তিনজন।

গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় একুশে টিভির গাড়ির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় রিপোর্টার মাহমুদ, ক্যামেরাপারসন ওয়াসিম ও গাড়িচালক সোহেলকে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে জানান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলটির সিনিয়র রিপোর্টার দিপু শিকদার। তিনি         বলেন, আন্দোলনকারীরা গাড়িটি জ্বালিয়ে দিয়েছে। গাড়ির ভিতরে ক্যামেরা, ট্রাইপড, বুম ছিল। সব পুড়ে গেছে। ক্যামেরাপারসন ওয়াসিম গুরুতর আহত।

একই এলাকায় পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কালের কণ্ঠের ফটোসাংবাদিক মঞ্জুরুল ইসলামের মোটরসাইকেল। তার ক্যামেরাটিও ভাঙচুর করা হয়। এদিকে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিটাগং রোডে সংবাদপত্রবাহী তিনটি গাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। থানারপাড় এলাকার মাদানীনগর মাদরাসার বিপরীত দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গাড়িগুলোর চালক ও সুপারভাইজারদের মারধর করা হয়। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া গাড়ি তিনটির নম্বর ঢাকা মেট্রো-চ ১৪-১৯১৪, ঢাকা মেট্রো-চ ১৩-১৯১০ ও ঢাকা মেট্রো-চ ১১-৮২৭১। তিনটি গাড়ির মধ্যে দুটি নিউ চাঁদনী পরিবহনের ও একটি কাজলা পরিবহনের।

চাঁদনী পরিবহনের স্বত্বাধিকারী ফরহাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গাড়িগুলো চট্টগ্রামে সংবাদপত্র নামিয়ে দিয়ে একসঙ্গে ঢাকায় ফিরছিল। চিটাগং রোডে ব্যারিকেড দেখে গাড়িগুলো গতি কমালেই মুহূর্তে ৭-৮ শ মানুষ এসে হামলা চালায়। তারা চালক ও হেলপারদের মারধর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে তিনটি গাড়িতেই পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় গাড়ির চালকদের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু, অনলাইন জিডি বন্ধ থাকায় ও কোটা আন্দোলনের কারণে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ জিডি নেয়নি। আজ (রবিবার) যেতে বলেছে।

কাজলা পরিবহনের ম্যানেজার শাহ আলম বলেন, হামলাকারীরা গাড়ির চালক ও সুপারভাইজারদের মেরে রক্তাক্ত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সারা দেশে পত্রিকা পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গাড়িগুলো একেবারে পুড়ে গেছে। অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় জিডিও করা যায়নি।

পুড়ে যাওয়া একটি গাড়ির চালক জাহাঙ্গীর বলেন, কারফিউয়ের মধ্যে রাস্তা মোটামুটি ফাঁকাই ছিল। হঠাৎ এমন হামলা হবে বুঝতেই পারিনি। আগুন থামলে পোড়া গাড়িগুলোর লোহালক্করও খুলে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।

সর্বশেষ খবর