মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

সারা দেশে গ্রেপ্তার ১১০০

♦ জহিরউদ্দিন স্বপনসহ বিএনপির আরও ৫০০ জন ♦ সহিংসতার ঘটনায় ঢাকায় ৩০ মামলা ♦ মেস, আবাসিক হোটেল, হামলাকারীদের বাসাবাড়ি ও গোপন আস্তানার সন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে গ্রেপ্তার ১১০০

রাজধানীসহ সারা দেশে সর্বাত্মক অভিযান শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ধ্বংসাত্মক তৎপরতায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে চলছে এই অভিযান। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ধরে ধরে ব্লক রেড দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকার বিভিন্ন মেস, আবাসিক হোটেল, হামলাকারীদের বাসাবাড়ি ও গোপন আস্তানা টার্গেট করে ব্লক রেড দেওয়া হচ্ছে। সারা দেশে এক দিনেই ১১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডিএমপি সূত্র জানিয়েছে, সহিংসতার ঘটনায় ঢাকায় এ পর্যন্ত ৩০টি মামলা হয়েছে। মামলার আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬১৬ জনকে। এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরউদ্দিন স্বপনকে গতকাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপির দাবি, গত কয়েকদিনে বিএনপির ৫০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপির ৫ শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার : কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে বিএনপির ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপি দাবি করেছে, অনেক নেতার বাড়িতে তল্লাশি করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জহিরউদ্দিন স্বপন, আন্তজার্তিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন অসীম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইয়েদুল আলম বাবুল, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম, দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহমেদ কচি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাসেম বকর ও পেশাজীবী নেতা ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেনসহ অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদির লুনা, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল ও আবদুস সালাম আজাদসহ অন্যান্য নেতা-কর্মীর বাসায় পুলিশি তল্লাশি চালানো হয়েছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।

কোটা আন্দোলন ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিএনপির নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে নেতা-কর্মীরা অফিসে যাচ্ছেন না। সারা দেশের কার্যালয়গুলোর অবস্থাও কেন্দ্রের মতোই। তৃণমূলেও প্রতিদিন নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানান দলের সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু। গ্রেপ্তার আতঙ্কে দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এদিকে আমির খসরু মাহমুদ ও নিপুণ রায় চৌধরীকে তিন দিনের রিমান্ড ও নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ বিএনপির ১৫ নেতাকে ১৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘরছাড়া : কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতার ঘটনায় চট্টগ্রামের চার থানায় মামলা হয়েছে ১৪টি। এসব মামলায় আসামি প্রায় ৩৫ হাজার। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছে ২৭৮ জন। যাদের বেশির ভাগই বিএনপির নেতা-কর্মী। বিএনপি নেতাদের দাবি, দলটির নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ কারণে নেতা-কর্মীরা ঘরছাড়া। অন্যদিকে আন্দোলন ঘিরে সরকারি দল জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ করলেও চট্টগ্রামে দলটির নেতা-কর্মীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, ‘কিছু মামলা আছে নাম উল্লেখ করে আবার কিছু মামলার আসামি অজ্ঞাত। এখানে যারা জড়িত তাদের আওতায় আনতেছি। ছাত্র আন্দোলনের আড়ালে কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠী অরাজকতা করেছে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে শনিবার পর্যন্ত পুলিশ বিনা কারণে ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। কোনো ধরনের সহিংসতায় বিএনপি সম্পৃক্ত না থাকলেও আমাদের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হচ্ছে।

সিলেটে ৭ মামলায় আসামি ৬ হাজার : সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার ইস্যুতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে জড়িয়ে বিএনপি ও জামায়াতের অন্তত ৬ হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। ৭ মামলায় আসামি হওয়া নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শত নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে দাবি করছে বিএনপি। আর আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শতাধিক আহত হয়েছেন বলেও দাবি তাদের। আন্দোলনে রাস্তায় নামলে পুলিশের বাধা, গুলি এবং রাতে বাসাবাড়িতে অভিযানের ফলে সিলেটে ঘরছাড়া বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীরা। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) উপ-কমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, চলমান আন্দোলনে সংঘাত সংঘর্ষ ও নাশকতার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় তিনটি ও জালালাবাদে চারটি মামলা হয়েছে। সাত মামলায় আসামি করা হয়েছে অন্তত ৬ হাজার, আর গ্রেপ্তার হয়েছেন ৯২ জন। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে পুলিশের অন্তত ২৫ সদস্য আহত হয়েছেন। আজবাহার আলী শেখ আরও জানান, সাংবাদিক এ টি এম তুরাব নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৪০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২ হাজার জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় বিএনপির যেসব নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

খুলনায় গ্রেপ্তার ৪৯ : কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিস্থিতিতে খুলনায় বিভিন্ন সড়কে শক্ত অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। গতকাল খুলনা-যশোর রোড, শিববাড়ি মোড়, মজিদ সরণী, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, এম এ বারী রোড, পাওয়ার হাউস মোড়, কেডিএ এভিনিউ, খানজাহান আলী রোড, গল্লামারী, ডাকবাংলা ও পিকচার প্যালেস মোড়সহ বিভিন্ন সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করে পুলিশ। জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে যারা বের হয়েছেন, তাদের পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনে ইন্ধন জোগানো ও আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে খুলনায় এ পর্যন্ত ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জনকে রবিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, বিএনপির সদস্য আনসার আলী, শহিদ খান, মহানগর ছাত্রদল আহ্বায়ক ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি, কৃষক দল আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সজীব তালুকদার, ২১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদল সাবেক আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিঠু, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোকাররম বিল্লাহ আনছারী, সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন আনছারীসহ ৪৯ জন। এর আগে গত ১৭ জুলাই দৌলতপুর থানা ও ১৮ জুলাই সোনাডাঙ্গা থানায় কোটাবিরোধী আন্দোলনে ইন্ধন জোগানো ও নাশকতা চেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা হয়।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, খুলনায় যারা কোটা আন্দোলনে ইন্ধন দিয়েছে তাদের শনাক্ত করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ধ্বংসাত্মক কাজে জড়িত ছিল না। তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। যারা ঢাকায় সহিংসতা করে খুলনায় ফিরেছে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

মাগুরা : নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে বিএনপি-জামায়াতের ৯ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে মাগুরা সদর থানা পুলিশ।

নওগাঁ : পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক মামলার অভিযোগে নওগাঁ পৌরসভার মেয়র ও সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি নজমুল হক সনিসহ বিএনপির ২০ নেতা-কর্মীক গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

জামালপুর : জামালপুরের নাশকতা ও সহিংসতা সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৬ থানায় ৯টি মামলা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে সহস্রাধিক। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ২২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতা ও জামায়াতের রোকনসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ঝিনাইদহ সদরে বিএনপি নেতাসহ দুজন, মহেশপুরে জামায়াতের রোকনসহ নয়জন ও কালীগঞ্জে একজন শিবির সদস্য। রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীদের উসকানি দেওয়ার অভিযোগে জামায়াত-বিএনপির ১৫ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রবিবার রাতে জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে শিবগঞ্জের রানীহাটি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর এলাকায় আন্দোলনকারীদের উসকানি দেওয়ার সম্পৃক্ততা থাকায় আটজনকে শিবগঞ্জ থানা পুলিশ এবং সাতজনকে সদর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

রংপুর : রবিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত আরও ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মহানগর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহামুদ হাসান রানা, ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাকারিউজ্জামান রয়েছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা অধিকাংশ বিএনপি জামায়াতের নেতা-কর্মী। এর আগে আরও ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে ঘটনার পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় কোনো মামলা করা হয়নি।

রাজশাহী : কারফিউয়ের তৃতীয় দিনে শান্তিপূর্ণ ছিল রাজশাহী। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা মোড়ে মোড়ে চেক পোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়েছেন। ছিল সেনা সদস্যদের টহল। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রাজশাহীতে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি সদস্যদের পাশাপাশি ৫ প্লাটুন সেনা সদস্য টহলে আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।

কুষ্টিয়া : কারফিউ জারির পর রবিবার কুষ্টিয়ার পরিস্থিতি শান্ত ছিল। সকাল থেকেই টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ। কুষ্টিয়া শহর সংলগ্ন মহাসড়কগুলোতে কিছু দূর পর পর পুলিশের চেকপোস্ট দেখা গেছে। কতটা জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েছেন তা সব মানুষকে থামিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন তারা। কারফিউ ভাঙায় সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।

ভোলা : ভোলায় সহিংসতা রোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জল ও স্থল দুই স্তরেই টহল ও নজরদারি জোরদার করেছে নৌবাহিনী। সোমবার সকাল ১০টায় ভোলা-বরিশাল নৌ-রুটের ভেদুরিয়া লঞ্চঘাটে টহল দেন নৌ-বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে সহিংসতার চেষ্টার অভিযোগে সদর উপজেলার গুপ্তমুন্সি এলাকা থেকে মো. সোহেল নামের ছাত্রদল কর্মীকে আটক করেছে বলে জানান সদর মডেল থাকান অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান পাটোয়ারী।

গোপালগঞ্জ : কোটালীপাড়া থানা পুলিশ হরকাতুল জিহাদ প্রধান আবদুল হান্নান মুন্সির ভাতিজা মাহফুজ মুন্সিকে (২৫) রবিবার রাতে গ্রেপ্তার করে। একই রাতে সদর থানা পুলিশ সদর থানা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রানা মোল্লা, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রোহান, সদর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদিকে টুঙ্গিপাড়া থানা পুলিশ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য এবাদুল ফকির, সদস্য মোহাম্মদ আলী ও রিফাতকে গভীর রাতে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া মুকসুদপুর থানা পুলিশ একই রাতে উপজেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক রুস্তক মোল্লা ও পৌর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক নাসির খানকে গ্রেপ্তার করেছে।

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) : ভাঙ্গায় মহাসড়কে বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে পুলিশের মামলায় আসামি হয়েছে ২ শতাধিক ব্যক্তি। এরা ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা, নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার বাসিন্দা। পুলিশ সোমবার দুপুর পর্যন্ত নগরকান্দার ছয়জন, সালথার ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ মামলার বাদী ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক কবির হোসেন। গত শনিবার তিনি মামলা করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সাভার (ঢাকা) : ছাত্র আন্দোলন ঘিরে গত কয়েকদিনের সহিংসতার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গতকাল ঢাকার সাভারে বিএনপি ও জামায়াতের ৫১ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় কয়েকজনের বাড়ি থেকে দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে দাবি পুলিশের। সাভারে বিভিন্ন যানবাহনে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

যশোর : শহরে পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের টহল রয়েছে। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও স্থাপনাগুলোয় পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। শহরে রিকশা ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন সীমিত আকারে চলাচল করে। তবে দূরপাল্লার সব পরিবহন বন্ধ আছে। এদিকে, সোমবার সকালে শহরে জেলা বিএনপি একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত নেতৃত্ব দেন।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। বিজিবি ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে। জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। দোকানপাট খোলা থাকলে কারফিউ জারির কারণে সেগুলো বন্ধ রাখতে বলা হয়। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৫ জন, নাটোরে একজন, জয়পুরহাটে ৩৬ জন, সিরাজগঞ্জে ১০১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সর্বশেষ খবর