শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

হত্যার সঠিক পরিসংখ্যান চায় জনগণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

হত্যার সঠিক পরিসংখ্যান চায় জনগণ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত কয়েক দিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়। জনগণের টাকায় কেনা কী পরিমাণ গোলাবারুদ, টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে- তার হিসাবও জনগণ চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ এক দিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নেবে। গতকাল দলের সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন-চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে। যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদের গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতিসঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরনের রোমহর্ষক কর্মকান্ড পরিহারের আহ্বান জানাচ্ছি। গত কিছুদিন ধরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত ছিল- সেই মুহূর্তে সরকারপ্রধানসহ সরকারি দলের মন্ত্রী-নেতারা তাচ্ছিল্য করে তাদের নির্মূল করার জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দেয়। ফলে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ার শেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত ছাত্রছাত্রীকে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে আহত করেছে। যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলোকন করেছে। এই নির্মম অত্যাচারে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুব্ধ। ফখরুল বলেন, বিএনপিও রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সব বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদের সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে ‘ব্লক রেইড’ দিয়ে গ্রেপ্তার করছে। তাদের হিসাবেই বিরোধী দলের প্রায় ৩ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার। ছাত্র-জনতার ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহার কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সব দেশপ্রেমিক মানুষ, রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শাসকগোষ্ঠীকে পরাজিত করে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দুর্বার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেপ্তার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির গ্রেপ্তারকৃত সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ মোশাররফ হোসেন খোকনকে তিন দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতা-কর্মীর বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার, কারান্তরিন ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি এসব নেতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

সর্বশেষ খবর