সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪ ০০:০০ টা

আন্দোলনে একাত্ম জাতীয় পার্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্দোলনে একাত্ম জাতীয় পার্টি

জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, চলমান অহিংস ছাত্র আন্দোলনের প্রতি জাপার সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের দেওয়া হতাহতের তালিকা জাপা বিশ্বাস করে না। নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করে ছাত্র হত্যায় জড়িত সব সরকারি কর্মকর্তা ও উসকানিদাতাদের বিচার নিশ্চিত করা উচিত। গতকাল রাজধানীর বনানীতে জাপার যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। পার্টির কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সম্পাদকদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। মুজিবুল হক বলেন, হতাহতের যে পরিসংখ্যান দেওয়া হচ্ছে, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হবে। ছাত্রদের ন্যায্য দাবি বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দমনকে তীব্র নিন্দা জানায় জাপা। ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে নিহত আবু সাঈদের মামলার এজাহারে প্রকৃত কারণ উল্লেখ না করার নিন্দা জানানো হয়েছে যৌথসভায়। তিনি বলেন, কেপিআইভুক্ত সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। তারা এর দায় এড়াতে পারে না। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রীদের পদত্যাগ দাবি করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের কোনো মন্ত্রীর বাসায়তো হামলা হয়নি। তারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, কিন্তু সরকারি স্থাপনার গুরুত্ব দেয়নি। জাপা মহাসচিব বলেন, যৌথসভায় নিহত শিক্ষার্থীদের বীর মুক্তিসেনা হিসেবে আখ্যায়িত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলমান ছাত্র আন্দোলনে আগেই জাপা সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছে। ছাত্রদের অহিংস আন্দোলনে সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তিনি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানি, নির্যাতন না করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে গ্রেফতার ছাত্রদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি করেন।

জাপার পক্ষ থেকে ১১ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরে তিনি অবিলম্বে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, প্রকৃত ছাত্রদের হল প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের সংসদে আইন পাসের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, সংসদে বিল আনা হলে জাতীয় পার্টি তাতে সমর্থন করবে। সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, সে কারণে আইন হওয়া উচিত।

অপর প্রশ্নের জবাবে এ মহাসচিব বলেন, সরকারের ভুলের কারণে আজকে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। জাপা নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তারা জ্বালাওপোড়াও বিশ্বাস করে না। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকারের বিভিন্ন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করে যাচ্ছি। তবে শিগগিরই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে চাই। পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে বেলা পৌনে ১২টায় বৈঠক শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে। বৈঠক সূত্র জানায়, নেতা-কর্মীরা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরকারের লেজুড়বৃত্তির অভিযোগ তোলেন। তারা অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, গত নির্বাচনে দলের ভূমিকা নিয়ে। কেউ কেউ জানতে চান, গত নির্বাচনের আগে সারা দেশ থেকে আসা নেতারা নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার পক্ষে মতামত দেন। তারপরও কেন অংশ নেওয়া হলো। অনেক নেতাই কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামার পক্ষে মতামত দেন। এ সময় শীর্ষ নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সালমা ইসলাম, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, মো, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর