শিরোনাম
শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্বাগত বিভিন্ন দল ও সংগঠনের আনন্দ মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক, পেশাজীবী সংগঠন। গতকাল প্রজ্ঞাপনের পর এই প্রতিক্রিয়া জানান রাজনৈতিক ও পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে ইতিহাসের দায়মুক্তি করা হলো। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এক বিবৃতিতে চিহ্নিত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী জামায়াত ও শিবির নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করায় ছাত্র জনতার দীর্ঘদিনের দাবি ও আন্দোলনের বিজয়। তারা জামায়াত ও শিবিরকে নিষিদ্ধ করার অংশ হিসাবেই তাদের সংগঠনের সব পর্যায়ের সদস্যদের সন্ত্রাসবাদী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানান। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা। গতকাল সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় কমিটির এক যৌথ সভায় সংগঠনটির নেতারা এ প্রতিক্রিয়া জানান। সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, শুধু দল বা সংগঠন হিসেবে নয়, জামায়াতের আদর্শিক ভিত্তি, অর্থাৎ মওদুদীবাদী রাজনীতিকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের মাধ্যমে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলো ধর্মের নামে ‘যে হত্যা, নির্যাতন ও নৈরাজ্যের অপরাজনীতি’ চালিয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করতে হবে। এই কমিশনের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে তদন্ত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনকে স্বাগত জানিয়েছে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। পরিষদের সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ (জাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় ছাত্র ঐক্য। গতকাল ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ৫টি সংগঠনের নেতাদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে যৌথ বিবৃতিতে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা বলেন, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে নিষিদ্ধ করায় বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ স্বাগত জানাচ্ছে। একই সঙ্গে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক পর্যায়ে যুক্ত ব্যক্তিদেরও সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকা প্রকাশ এবং জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিয়ন্ত্রিত সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টারসহ মৌলবাদী-সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ডে অর্থায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার জোর দাবি জানান তারা। যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ছাত্রলীগের (জাসদ) সভাপতি রাশিদুল হক ননী, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহাম্মেদ, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি অতুলন দাস আলো, সাধারণ সম্পাদক অদিতি আদ্রিতা সৃষ্টি, বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রবিন হোসেন জয়, জাতীয় ছাত্র ঐক্যের আহ্বায়ক শাহিনুর রহমান। জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করায় সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা ঐক্য পরিষদ। গতকাল তোপখানা রোডে সংগঠনের কার্যালয়ে অ্যাডভোকেট ঢালী মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জামায়াত-শিবিরের সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দ্রুত বন্ধ ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় অনুকূলে বায়েজাপ্ত করার আহ্বান জানান। সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছেন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের মহাসচিব মো. শাজাহান কবির বীরপ্রতীক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এতে স্বাক্ষর করেছেন খেতাবপ্রাপ্ত ৩২ জন মুক্তিযোদ্ধা। তারা বলেন, জামায়াত-শিবিরসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদেরকে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করার অপরাধে আইনের আওতায় এনে বিচার করার জন্য জোর দাবি করছি। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে জারি করা সরকারি প্রজ্ঞাপন ঐতিহাসিক দায়মুক্তি বলে অভিহিত করেছে বাংলাদেশ যুব মৈত্রী। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করায় সন্তোষ প্রকাশ করে সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

সর্বশেষ খবর