শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
মির্জা ফখরুল ইসলাম

তদন্ত ছাড়া দল নিষিদ্ধ করা অসাংবিধানিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিশ্বাসযোগ্য কোনো তদন্ত ছাড়াই জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটি নিন্দনীয়, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক। ছাত্র আন্দোলনে বর্বরোচিত গণহত্যার দায়ে আওয়ামী সরকারের পদত্যাগের চলমান ইস্যুকে ধামাচাপা দিতে নতুন বিতর্ক, নতুন ইস্যু সামনে আনা হচ্ছে, যা বুমেরাং হতে বাধ্য। গতকাল রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

এদিকে, বিএনপি মহাসচিব অপর এক বিবৃতিতে বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বর্বর ও অবৈধ শাসক। এ সরকার সভ্য মানুষের উপদেশ কখনোই গ্রহণ করবে না। কারণ তারা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গণহত্যা চালিয়ে বর্বর শাসন কায়েম করে যেভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকতে চায়। ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতায় থাকতে পারবে না এই সরকার। তিনি দেশের আপামর জনতা ছাত্র-যুবকসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

 গতকাল এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।  ফখরুল বলেন, সরকারপ্রধান, সরকারের মন্ত্রী-নেতারা প্রতিনিয়ত মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে বলছে, তথাকথিত ‘তৃতীয় শক্তি’ নাকি গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। অথচ সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে ছাত্রসহ সাধারণ জনতার কাছে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। তা ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারি দলের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের হাতে। তার পরও সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য এ মিথ্যাচারের কোরাস গেয়েই চলেছে।

‘তৃতীয় শক্তি’ না খুঁজে নিজেদের অপশক্তিকে চিহ্নিত করুন। তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের কোনো পরামর্শ কর্ণপাত না করে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মামলা, হামলা, দমনপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পুলিশ ঢাকা, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী, দিনাজপুর, গাজীপুর, যশোর, ঠাকুরগাঁও, মাগুরা, নরসিংদীসহ বিভিন্ন জায়গায় বর্বরোচিত কায়দায় সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার শেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ এবং গ্রেপ্তার চালিয়েছে। সারা দেশে প্রায় শতাধিক নিরীহ ছাত্রছাত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে, ছাত্রীদের করেছে লাঞ্ছিত। পুলিশের নির্মম আঘাত থেকে রক্ষা পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া। বরিশালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছে যুগান্তরের সাংবাদিক শামীম আহমেদ এবং যমুনা টিভির ক্যামেরাম্যান হৃদয়সহ অসংখ্য ছাত্রছাত্রী।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার এতই ভীতসন্ত্রস্ত এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে, তারা নিজেরাই বলছেন, শ্রীলঙ্কার মতো গণভবন দখল করে নেবে জনগণ এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। সেই ভয়ে তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা রাষ্ট্রের সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে অপব্যবহার করে নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের প্রতি সরকারের অন্যায় ও বেআইনি হুকুম, আদেশ, নির্দেশ, চাপ উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে দমনপীড়ন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

সর্বশেষ খবর