মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

বঙ্গভবনে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক, দৃষ্টি অন্তর্বর্তী সরকারে

কীভাবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে এবং কারা কারা স্থান পাবেন সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সে আলোচনাও চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশের ক্ষমতা বুঝে নিয়েছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। গতকাল বিকাল ৪টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সেনাপ্রধান এ তথ্য জানান। এর পর থেকেই আলোচনায় আসেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। কীভাবে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হবে এবং কারা কারা স্থান পাবে সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে সে আলোচনাও চলছে।

গতকাল জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সেনাপ্রধান বলেছেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দেওয়া হবে। তবে এই মুহূর্তে আমি সমস্ত দায়িত্ব নিচ্ছি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীসহ দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। সেনাপ্রধানের ভাষণের পর বিভিন্নভাবে জানা গেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বেশ কয়েকটি নাম রয়েছে আলোচনায়।

জানা গেছে, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করার পর যে কোনো সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথের আয়োজন করা হবে। এরপর এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ শুরু করবে। কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করতে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেছেন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারাও। এর মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, খেলাফতে মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, গণতন্ত্র মঞ্চের প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। এ ছাড়াও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মো. ফয়জুল করীম, হেফাজত ইসলামের মাহবুবুর রহমান, জাকের পার্টির শামিম হায়দার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মাওলানা জালাল উদ্দীন আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের জুনায়েদ সাকি, ঢাবি শিক্ষক আসিফ নজরুল, মেজর জেনারেল ফজলে রাব্বি (অব.), ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ বঙ্গভবনে গেছে বলে বিভিন্ন তথ্যে জানা যায়। এর আগে গতকাল বিকালে আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শিগগির সব শিক্ষার্থী-শিক্ষক প্রতিনিধির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন। এর আগে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সেনাপ্রধান বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তারা এসেছিলেন। আমরা সুন্দর আলোচনা করেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করব এবং এই সরকারের মাধ্যমে দেশের সব কার্যকলাপ চলবে। আমরা এখন মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাব। তার কাছে গিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে আলোচনা করে দেশ পরিচালনা করব। জাতির উদ্দেশে ভাষণের আগে সেনাপ্রধানের বিভিন্ন দলের নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে কারা ছিলেন, এই প্রশ্নে সেনাপ্রধান বলেন, জামায়াত, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল খেলাফতে মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকির নাম উল্লেখ করেন। তবে বিভিন্ন নেতারা জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুও অংশ নেন। ওই বৈঠকের জাতীয় পার্টির পক্ষে ছিলেন দলের কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

খুলছে অফিস : আজ মঙ্গলবার সকাল হতে বাংলাদেশের সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, স্কুল কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। থাকছে না কারফিউ। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল রাতে এক বার্তায় এ কথা জানিয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর