শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

দেশ গড়ার প্রত্যয় উপদেষ্টাদের

দোষীদের শাস্তি হবে : আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রে সংস্কার চাই : রিজওয়ানা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে : ফরিদা, বৈষম্য দূর করতে হবে : আদিলুর

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রের সংস্কার ও দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। একই সঙ্গে অরাজকতা ও অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে মুক্তি এবং বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করবেন তাঁরা। গতকাল শপথ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টারা এ প্রতিক্রিয়া জানান। 

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, যারা দোষী আছেন তাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি একটা কথা সবসময় বলি এখনো বলি যে পেশি শক্তির বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি যেন তাদের মতন হয়ে না যাই। তাহলে আমাদের ছাত্র-জনতা যে অভাবনীয় সুযোগ আমাদের জন্য নিয়ে এসেছে তার অর্জন মাহাত্ম্য ম্লান হয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সভাপতি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে মানবাধিকার সমুন্নত রেখেছে। আমার দেশে কেন পারা যাবে না। নিশ্চয় পারা যাবে। এখানে যারা শপথ নিয়েছি আমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত নই। কাজ শুরু করি, পরে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা  রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাষ্ট্রের সংস্কার চাই।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও উন্নয়ন কর্মী ফরিদা আখতার বলেন, অরাজকতা ও অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে মুক্তি এবং বৈষম্য দূরীকরণে ভূমিকা রাখবেন। ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী যে দাবিগুলো রয়েছে তা সবার আগে পূরণ করতে হবে। এত প্রাণ চলে গেছে তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমাদের দেশে যে অন্যায়-অবিচার আছে, সাধারণ মানুষ যে কষ্টে আছে এ বিষয়গুলোতে হাত দিতে হবে। দেশের নারী সমাজের জন্য কাজ করতে যেন পারি এ চেষ্টা করতে হবে। আর দায়িত্ব আমাদের সবাইকেই নিতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, দায়িত্ব এসেছে যেন সুচারুভাবে পালন করতে পারি। আর এটা স্বাভাবিক দায়িত্ব নয়, জুলাইয়ের মেসাকারের ওপর দাঁড়িয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার দায়িত্ব। তিনি বলেন, সারা দেশ এখন বৈষম্যের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। একটার পর একটা বৈষম্য দূর করতে হবে। খুব দ্রুত সময়ে শেষ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করাই আমাদের লক্ষ্য।

অতিথি হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ, গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, পরিবর্তনকে সবাই স্বাগত জানিয়েছে। এ জন্য আজ এখানে এত মানুষের উপস্থিতি। সবার মনে পরিবর্তন এসেছে। যেটা দরকার ছিল। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যেহেতু পরিবর্তন হয়েছে, সেজন্য একটু আশা করা যায়।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র আন্দোলনে আমাদের আলাদা কোনো ভূমিকা ছিল না। যা ভূমিকা ছিল সেটা জাতির জন্য। আমরা প্রত্যাশা করি যেমনটা আপনি করেন, যেমনটা যুবসমাজ করে, যেমনটা ১৮ কোটি মানুষ প্রত্যাশা করে। আর সামাজিক সুবিচার আমাদের প্রত্যাশা। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তবে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হলো বেশি দিন বা খুব বেশি দীর্ঘ সময় নেওয়া উচিত হবে না। একটা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে হওয়া উচিত। তা না হলে অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। আরেক প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, একটা অবৈধ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে অবৈধ করতে পারে না। সে ফয়সালা আল্লাহ তায়ালা করেছেন। এ ব্যাপারে আমার কোনো কথা নেই।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, জনগণের যে প্রত্যাশা আমাদেরও একই প্রত্যাশা। গত ১৬-১৭ বছর আমাদের আন্দোলন তারপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সবার সফলতা এখন স্বাভাবিকভাবেই এ সরকারের প্রতি আমাদের আশা এমন একটা স্ট্রাকচারের ওপর আমাদের দাঁড় করিয়ে  দেবে যার ওপর ভিত্তি করে আমরা সামনে এগিয়ে যাব। আমি আশা করছি সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে।

সর্বশেষ খবর