১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালনের জন্য ঘোষিত সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে; যা পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে ব্যাপক ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্ট সাধারণ ছুটি বাতিলের বিষয়ে উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠকে অনুমোদন হয়।

এদিকে গতকাল রাতে ছুটি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে উপদেষ্টা পরিষদের সংলাপে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করার বিষয়ে ব্যাপক ঐকমত্য হওয়ায়? উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্তক্রমে সরকার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঘোষিত ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করল।’

গতকাল সকালে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন পিলখানার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদর দপ্তরে বিজিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ১৫ আগস্ট মাঠে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আমরা সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করব। পুলিশ থাকবে, বিজিবি, র‌্যাব থাকবে। হয়তো সেনাবাহিনীও থাকবে।

এদিকে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ শোকপ্রস্তাব গ্রহণ করে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়স-সংক্রান্ত একটি প্রভিশন বিলুপ্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আর্থিক খাতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে। এ পদে বয়সসীমা ৬৭ বছর নির্ধারিত থাকায় আর্থিক খাতে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। পাশের দেশ ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়ার অনেক দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে সর্বোচ্চ বয়সসীমার উল্লেখ নেই। এ কারণে এটি বয়সসীমা বিষয়টি বিলুপ্ত করার অনুমোদন দেয়।

এ ছাড়া আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা এবং শহীদ পরিবারকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উদ্যোগে একটি কমিটি গঠন করা হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ওই কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটি গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা এবং শহীদ পরিবারকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করবে। একই সঙ্গে সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানে শহীদ এবং আহত ব্যক্তিদের পরিচিতিসহ পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করবে।