বগুড়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ১০১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষক সেলিম হোসেন (৩৫) নিহতের ঘটনায় গতকাল সদর থানায় মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী সেলিম হোসেনের বাবা সেকেন্দার আলী। মামলায় শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেলিম হোসেনের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের পালিকান্দা গ্রামে।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, সহসভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাগর কুমার রায়, এ কে এম আসাদুর রহমান দুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, সাধারণ সম্পাদক আবু ওবায়দুল হাসান ববি, জেলা যুবলীগ সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি ভিপি সাজেদুর রহমান শাহিন, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান শান্ত, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা, সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক দুই সভাপতি আল রাজি জুয়েল ও নাঈমুর রাজ্জাক তিতাস, সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদক মাশরাফি হিরো ও অসীম কুমার রায়, আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত আবদুল মান্নান আকন্দ, বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন, সহসভাপতি মাহফুজুল ইসলাম রাজ ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু সুফিয়ান সফিক। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩৫০ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় স্টেশন সড়কে আইএফআইসি ব্যাংকের সামনে আওয়ামী লীগের সাবেক ওই দুই সংসদ সদস্যসহ সাত নেতার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় তাঁরা ককটেল ও পেট্রলবোমা হামলা চালান। হামলায় শিক্ষক সেলিম হোসেন রক্তাক্ত হন। বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আবদুল মতিন সরকার ও আমিনুল ইসলাম রামদা দিয়ে কুপিয়ে এবং কাউন্সিলর আরিফুর রহমান হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে তাকে জখম করেন। পরে অন্য হামলাকারীরা অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। মামলায় আইনি সহায়তাকারী আইনজীবী আবদুল বাসেত বলেন, সেলিম হোসেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে তাঁকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ কারণে এ দুজনকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে। বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ জানান, মামলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
