সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উন্নত চিকিৎসার জন্য চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড দ্রুত তাঁকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবার ও দল এতে সম্মতি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি মাল্টিপোল ডিজিজ সেন্টারে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপনসহ জটিল চিকিৎসাগুলো করানো হবে। মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য এ তথ্য জানিয়েছেন। গতকাল জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের দেখতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা এখন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যথাসময়ে তাঁকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হবে বলে জানান বেগম জিয়ার এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক। জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের ভবিষ্যৎ চিকিৎসায় সম্ভাব্য দেশের তালিকায় ইউরোপের একটি দেশের নামও ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ছাড়াও আর বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। এসব বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারা বেগম জিয়ার সঙ্গে যাবেন তারা ভিসাসহ অন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। চলতি মাসেই তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশ ত্যাগ করতে পারেন। প্রথমত, খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন করা হবে। যদিও তার আগে তাঁর পুরো শরীর চেকআপ করে অন্য জটিলতাগুলো কমিয়ে আনতে হবে। তারপর তাঁর শারীরিক অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বর্তমানে আগের চেয়ে ভালো আছেন বলে এভারকেয়ার হাসপাতাল, চিকিৎসক এবং দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে। প্রতিদিন বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতারা তাঁকে দেখতে যাচ্ছেন। তিনি পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। তাঁর ঘুম ও খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক নিয়মে হচ্ছে। তাছাড়া, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইতিবাচক হওয়ার কারণে তিনি অনেকটা মানসিক স্বস্তিতে আছেন। তাঁর স্বাস্থ্যের বিভিন্ন প্যারামিটার সঠিক মাত্রায় রয়েছে। তবে এখনো শারীরিক জটিলতা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে দীর্ঘদিন ধরে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। গত বছর অক্টোবরে তাঁর লিভার সিরোসিস রোগের চিকিৎসা দিতে ঢাকায় আসেন যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স হাসপাতালের তিন চিকিৎসক। গত ২২ জুন গভীর রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। চিকিৎসা শেষে ২ জুলাই হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন বেগম খালেদা জিয়া। সবশেষ গত ৮ জুলাই হঠাৎ প্রেশার ও রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় তাকে আবারও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেই থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি। সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর গত চার বছরে খালেদা জিয়াকে বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয়েছে। গত ছয় বছরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং এভারকেয়ার হাসপাতাল মিলিয়ে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর