লাগাতার বৃষ্টিতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গে বেশকিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২২-এ দাঁড়িয়েছে। এনডিটিভি, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস।
খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সারা রাত বৃষ্টি হওয়ায় গতকাল পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে পানি জমতে থাকে। এর আগে সিকিমে পাহাড় ধসের ফলে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একাংশে ভেঙে যাওয়ায় জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। টাঙন, পুনর্ভবা ও গঙ্গা নদীতে পানির স্তর বেড়ে গিয়েছিল। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল নদীগুলোর পানির স্তর। কিন্তু ধীরে ধীরে জলপাইগুড়ির বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে ও সব নদীর পানির স্তর লাল সতর্কতা থেকে হলুদ সতর্কতায় নেমে আসে। তবে বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। এদিকে ত্রিপুরায় ব্যাপক বন্যায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৪০০ মানুষকে ৪৫০টি আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের ত্রাণ, পুনর্গঠন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যায় ২ হাজার ৩২টি স্থানে ভূমিধস হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৭৮৯টিতে উদ্ধারকাজ চালানো হয়েছে। অন্যান্য স্থানেও পুনরুদ্ধার কাজ চলমান আছে। মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, শান্তিরবাজার এলাকায় অশ্বনিত্রিপুরাপাড়া ও দেবীপুরে ভূমিধসে ১০ জন ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক অবস্থায় আছে। কয়েক দিন ধরে রেকর্ড ভারী বৃষ্টিপাতে ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৭ লাখ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের। এদিকে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ত্রিপুরার আটটি জেলার সব কটিতেই ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি রেখেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় সাহায্য ও সহায়তা আরও বাড়াতে কাজ করছে দেশটির বিমান বাহিনী। এ ছাড়া ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) বহু সদস্য সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন। ভারতীয় বিমান বাহিনীর দুটি সি-১৩০ এবং একটি এএন-৩২ প্লেন ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার কাজ করেছে। এ ছাড়া হেলিকপ্টারগুলোও দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে ও আরও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে কাজ করে যাচ্ছে। খবরে বলা হয়, বন্যা পরিস্থিতির কারণে আগরতলা থেকে সব রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং অন্যান্য বন্যাদুর্গত এলাকায় টেলিযোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ধলাই, খোয়াই, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা ও উনাকোটি- এই ছয়টি জেলায় নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।