সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক জয়

আসিফ ইকবাল

পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক জয়

২০০৩ সালে মুলতান। এরপর ২০১২ সালে মিরপুর। শুধু কান্না, আর কান্না। হতাশায় ভেঙে পড়া। দুবারই জয়ের কাছাকাছি এসে পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। খালেদ মাহমুদ সুজন, মোহাম্মদ রফিক, হাবিবুল বাশার, খালেদ মাসুদ পাইলট, এরপর সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। কান্নার সেই ছবিগুলো এখনো কাঁদায় বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের। ২০২৪ সাল; বাংলাদেশের ইতিহাসটাই পাল্টে দিয়েছে। ক্রিকেট ইতিহাসে রং পাল্টানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। রাওয়ালপিন্ডিতে নাজমুল হোসেন শান্তর সেনাপতিত্বে নতুন ইতিহাস লিখেছেন মুশফিকুর রহিম, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসানরা। ১৮ কোটি মানুষকে উপহার দিয়েছেন ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক জয়। মুলতান ও মিরপুরের কান্নাকে কফিন চাপা দিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে বুনো উচ্ছ্বাসে মেতেছেন নাজমুলরা। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে হেসেছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন একটি সোনালি জয়ের জন্য বাংলাদেশ অপেক্ষা করেছে ২৩ বছর। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪ টেস্টে এই প্রথম জিতল বাংলাদেশ। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের মাটিতে দলটির বিপক্ষে প্রথম জয়। পাকিস্তানের মাটিতে এর আগে ৫টি টেস্ট খেলে হেরেছিল সবগুলো। এবারই প্রথম জিতল। ঐতিহাসিক জয়ের পর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস অভিনন্দন জানিয়েছেন নাজমুল বাহিনীকে। এ ছাড়াও অভিনন্দন জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

২০০০ সাল থেকে টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানে খেলছে ২০০১ সাল থেকে। গত দুই যুগের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে টাইগাররা ১৪২ ম্যাচ খেলে জিতল ২০টি। পাকিস্তানের মাটিতে জিতল ২৩ বছর অপেক্ষা করে। ঐতিহাসিক জয়টি আবার বিশেষ কারণে আলাদা মাত্রা পেয়েছে। ভারত ছাড়া বিশ্বকাপজয়ী অপর ৫টি দলের বিপক্ষে জিতল বাংলাদেশ। অপর ১১টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়া পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছে।

রাওয়ালপিন্ডিতে এর আগে ২০২০ সালে টেস্ট খেলেছিল দুই দল। পাকিস্তান জিতেছিল ইনিংস ব্যবধানে। চার বছর পর ১০ উইকেটে ওই হারের প্রতিশোধ নিল টাইগাররা। এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে এত বড় ব্যবধানে জিতেছে টাইগাররা। গতকাল ১ উইকেটে ২৩ রান নিয়ে খেলতে নেমে সাকিব ও মিরাজের ঘূর্ণিতে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। দুই স্পিনার উইকেট নেন ৭টি। প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট নেওয়া সাকিবের দ্বিতীয় ইনিংসের স্পেল ১৭-৩-৪৪-৩। প্রথম ইনিংসে ১ উইকেট নেওয়া মিরাজের স্পেল ১১.৫-২-২১-৪। অথচ উইকেট বানানো হয়েছিল পুরোপুরি পেসারদের কথা ভেবে। পাকিস্তান খেলিয়েছে ৪ পেসার এবং বাংলাদেশ খেলিয়েছে তিন পেসার। ম্যাচসেরা হয়েছেন মুশফিকুর রহিম ১৯১ রানের ইনিংস খেলে। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০ মিলিয়ে ৪৪৪ ম্যাচে সাকিবের রান ১৪, ৬৪১ এবং উইকেট ৭০৪টি। তিনি এখন সবার ওপরে। তার পেছনে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টরি।

 

সর্বশেষ খবর