মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা
মির্জা ফখরুল

আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ দেবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ দেবেন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের প্রায় ৬০ লাখ লোকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। পত্রিকায় দেখলাম প্রধান উপদেষ্টার মামলা উঠানো হয়েছে। আরেকজন উপদেষ্টার মামলা তুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, আমাদের ১ লাখ ৪৫ হাজার মামলা অবিলম্বে তুলে নিতে হবে।’ নির্বাচন নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করেছিলাম প্রধান উপদেষ্টা একটি রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার মুখ থেকে সেটা শুনতে পাইনি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদের ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন। তিনি ফ্যাসিবাদী সরকারের হয়ে যেসব প্রশাসনিক কর্মকর্তারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের দ্রুত অপসারণ করে সৎ পদবঞ্চিতদের দায়িত্বে নিয়ে আসতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ১৫-১৬ বছরের দীর্ঘ সংগ্রামে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন হয়েছে, তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের এই চলে যাওয়াটা আমাদের কাছে নিঃসন্দেহে বড় বিজয়। মির্জা ফখরুল বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, বন্যা হতে পারে। অতি বৃষ্টিতে বন্যা হবে। কিন্তু এবারের বন্যা ক্রিমিনাল অপরাধ। ভারত যে বাঁধ খুলে দিয়েছে তাতে ভাটিতে কী অবস্থা হবে সেটা অবহিত করা হয়নি; যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। অপ্রস্তুত অবস্থায় পানির ঢলে ভেসে গেছে বহু মানুষ। মৃত্যুবরণ করেছে মানুষ। তারা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমি তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি। দেশের সংকটকাল নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একটা ক্রান্তিকালে আছি। একটি সফল ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পরে একটি অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে। আমাদের এ সরকারের প্রতি আস্থা আছে। এ সরকারের প্রধান বিশ্বের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। তিনি বলেন, এ সরকারের কাছে দেশের জনগণের প্রত্যাশা আকাশচুম্বী। এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের পরে এমন একটা নির্বাচন দেবেন, যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এর মধ্যে যত ঝঞ্জাল আছে সেগুলো পরিষ্কার করবে। এতদিন চিন্তিত ছিলাম প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে কোনো কিছু শুনতে পাচ্ছি না। কালকে উনি কথার কথা বলেছেন, জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য হলো, তিনি বলেছেন কবে নির্বাচন হবে সেটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সঠিক। তবে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এই ব্যাপারে আলোচনা করতে হবে। আমি আশা করব প্রধান উপদেষ্টা সে প্রক্রিয়ায় যাবেন। তিনি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলবেন।  মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ স্টেটে থাকতে চাই না। বাংলাদেশকে আমরা কোনো পুলিশি স্টেটে পরিণত হতে চাই না। পুলিশ আমাদের নিয়ন্ত্রণ করবে প্রতিনিয়ত বলে দেবে- ‘এটা করা যাবে, এটা করা যাবে না’। প্রতি মুহূর্তে মিথ্যা মামলা দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে টাকা নিয়ে বাণিজ্য করে আমাদের সর্বনাশ করবে, আমাদের ছেলে মেয়েদের গুলি করে হত্যা করবে। আমরা চাই পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে গড়ে তোলা হোক। বিএনপি মহাসচিব আনসার সদস্যদের আন্দোলন সম্পর্কে বলেন, গতকাল সচিবালয়ে ঘেরাও করে আনসার সদস্যদের পোশাক ব্যবহার করে একটা গোলযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ছাত্ররা সেটা নস্যাৎ করে দিয়েছে। এটা কিন্তু অশনি সংকেত। অর্থাৎ যারা পরাজিত শক্তি তারা চায় বিভিন্নভাবে এ বিজয়কে নস্যাৎ করার জন্য। আমরা জনগণকে আহ্বান জানাব এ বিষয়গুলোকে প্রশ্রয় না দেওয়ার জন্য। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের স্মৃতিচারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আমার ছাত্রজীবনে কাজী জাফর আহমেদের নাম শুনেছি। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি তখন জাফর ভাই জেলে ছিলেন। একদিন তিনি জেল থেকে বের হলে তার এক বক্তৃতা শুনে আমরা অবাক হয়েছি। তার বক্তৃতা শুনে অনেকে ছাত্র রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর