একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে এবং এ বাহিনীর সংস্কারে যুক্তরাজ্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ সহযোগিতার কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বৈঠকে সন্ত্রাস দমনে আন্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা, অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, পুলিশ সংস্কারে সহায়তা, বন্যা পুনর্বাসন, রোহিঙ্গাদের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুলিশের সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে তা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক সহায়তা দিয়ে যুক্তরাজ্য সহায়তা করতে পারে। জবাবে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, সেপ্টেম্বরে এ-সংক্রান্ত যুক্তরাজ্যের একটি এক্সপার্ট টিম বাংলাদেশ সফর করবে। তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে পারে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে হাই কোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে সভাপতি করে পাঁচ সদস্যের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশন আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। এ সময় উপদেষ্টা জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বাংলাদেশ সফরের কথা হাইকমিশনারকে অবহিত করেন। এ ছাড়া বন্যার্তদের সহযোগিতায় যুক্তরাজ্যের সহায়তা কামনা করেন। সারাহ কুক যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশনাল প্রসিডিউর (এসওপি) অনুসরণ করার কথাও তিনি বলেন। সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিগত দুই মাসে (৫ জুন থেকে ৫ আগস্ট) সংঘটিত সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার প্রত্যাশা করে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত আইন ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। ব্রিটিশ হাইকমিশনার বলেন, যুক্তরাজ্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিতে ইচ্ছুক। সন্ত্রাস দমনে যুক্তরাজ্য বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আমরা সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে চাই। রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন ও প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহযোগিতার বিষয়ে হাইকমিশনার জানান, রোহিঙ্গাদের সহায়তার ক্ষেত্রে অর্থায়নে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। বিগত সাত বছরে দেশটি রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করেছে। রোহিঙ্গা ইস্যু যাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরে থাকে, সেজন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে যুক্তরাজ্য কাজ করে যাচ্ছে। সাক্ষাৎকালে যুক্তরাজ্য হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) দোয়িন আদেল শিয়ানবোলা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।