গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। গতকাল ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ সনদে স্বাক্ষর করেন। শেখ হাসিনা সরকারের সময় বছর ধরে বাংলাদেশে অসংখ্যক গুমের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দেশি ও বিদেশি মানবাধিকার কর্মীরা এ সনদে স্বাক্ষরের চাপ দিলেও তাতে স্বাক্ষর করেনি বাংলাদেশ। অবশেষে অন্তর্বর্তী সরকার এ সনদে স্বাক্ষর করল। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক গুম দিবস আজ পালন হবে বিশ্বব্যাপী। গতকাল উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারমূলক বিষয়গুলোর অন্যতম হলো- প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করা এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করা। এ লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দি প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্স ডিসএপিয়ান্স (আইসিপিপিইডি)’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনভেনশনে বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইসিপিপিইডি জাতিসংঘের আওতাধীন একমাত্র আন্তর্জাতিক কনভেনশন যা ‘এনফোর্স ডিসএপিয়ান্স’কে কেন্দ্র করে গৃহীত হয়েছে। যার লক্ষ্য হলো জোরপূর্বক অন্তর্ধান বা গুম প্রতিরোধ করা, ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। এ ছাড়া গুরুতর এ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা। ৩০ আগস্ট জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক গুম দিবস পালনের আগেই উপদেষ্টা পরিষদে বৈঠকে আইসিপিপিইডিতে বাংলাদেশের পক্ষভুক্ত হওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। বৈঠক শেষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এটি আমাদের জন্য বিশেষ করে মানবাধিকার কর্মীদের জন্য একটি বড় মাইলফলক। ৭০০ জনের ওপরে মানুষ এখন পর্যন্ত গুমের কারণে নিখোঁজ আছেন। আর যেন কেউ কখনো নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে কোনো বাহিনীকে দিয়ে কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে নাগরিকদের গুম করতে না পারে। এ জন্য এই সনদে স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ বিষয়ে এখন প্রয়োজনীয় আইনি সংস্কার গ্রহণ করা হবে।