অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আবারও ফোনে কথা বলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। গতকাল তাদের মধ্যে এ ফোনালাপ হয়। আলাপকালে উভয় নেতা বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সমৃদ্ধির জন্য ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন বলে জানায় পাকিস্তান রেডিও। দুই নেতার ফোনালাপের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফোনালাপে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্য তাদের জনগণের সুবিধার জন্য যথেষ্ট সহযোগিতায় রূপান্তরিত হবে। এ সময় দ্বিপক্ষীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি। এতে আরও বলা হয়, ফোনালাপের শুরুতেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হওয়ায় ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানান শাহবাজ শরিফ। চলমান বন্যায় হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ড. ইউনূসের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। ফোনালাপে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন শাহবাজ শরিফ। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে। এ সময় তিনি ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের পরামর্শ এবং যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের মতো প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। গুরুত্বারোপ করেন সার্ক প্রক্রিয়াকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তার প্রতি। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে সার্ককে একটি শীর্ষ আঞ্চলিক ফোরাম হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি নিয়মিত সার্ক সম্মেলন আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সার্ক রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের মধ্যে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকের আয়োজনের ওপর জোর দেন। ড. ইউনূস দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং জনগণের মধ্যে সংযোগ জোরদার করারও আহ্বান জানান। এ ছাড়া বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও একমত হন তারা। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস টেলিফোন আলাপে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ধন্যবাদ জানান। ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের বন্যাদুর্গতদের জন্য পাকিস্তানের জনগণের সহানুভূতি ও সংহতি জানিয়ে পাঠানো বার্তার জন্য।