সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম

জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় বিএনপির ৪২২ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় বিএনপির ৪২২ জন নিহত

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৪২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহত প্রত্যেকের নাম, পরিচয় ও ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই তালিকা বিএনপির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় সারা দেশে ৮৭৫ জন শহীদ হন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দেশজুড়ে শহীদ হওয়া বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা-রাজনীতির মানুষের মধ্যে একটা বড় অংশ যে বিএনপির নেতা-কর্মী, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং তা তাঁদের সুদীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের অনিবার্য ফল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস। গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ব্যথাতুর মায়ের ডাক। স্বামী হারানো বেদনাবিধূর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ। পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার। আর কারাগারে বন্দি ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থনা। তাঁদের সবার ১৬ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে, প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে চলমান ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থানে বিএনপির ৪২২ জন শহীদ হন। এর আগে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপির ১ হাজার ৫৫১ জন শহীদ হন। গুম হন ৪২৩ জন। আর সব রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে এই সময়ে গুমের সংখ্যা প্রায় ৭০০। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখ মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করা হয়। আসামি ৬০ লাখ। এসব কেবল বিএনপির ত্যাগের পরিসংখ্যানই নয়, বরং বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে দলটির অবিচল সংগ্রাম ও অবদানের প্রতিফলন। মির্জা ফখরুল বলেন, এই আন্দোলন হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি বহু বছরের নির্যাতন, নিপীড়ন ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিএনপির দীর্ঘদিনের নিরবচ্ছিন্ন পরিক্রমা। এখানে বিএনপির অবদান খাটো করার কোনো অবকাশ নেই। আন্দোলনের কৃতিত্ব নয়, স্বৈরাচার পতন নিশ্চিত করাই বিএনপির লক্ষ্য ছিল বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

সর্বশেষ খবর