শিরোনাম
রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

কাজই শুরু হয়নি, বিল নিয়ে উধাও ঠিকাদার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

চুক্তি সম্পাদনের সাত দিনের মাথায় প্রায় সব বিল তুলে নিয়ে গেছে ঠিকাদার। কাজটির চুক্তি সম্পাদন হয় চলতি বছরের ২ জুন। কাজ শুরুর তারিখ নির্ধারণ ছিল ৮ জুন। কাজের চুক্তিমূল্য ছিল ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৩২ টাকা। কাজ শুরু হওয়ার আগেই ঠিকাদারকে প্রথম চলতি বিল হিসেবে ৯ জুন দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ২৩ হাজার টাকা।

ঘটনাটি কিশোরগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)। কাজ শুরু না করা সত্ত্বেও প্রায় সব বিল দেওয়ার বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, আমার হাত দিয়ে তো কত বিলই যাচ্ছে। এই বিলটি গেছে কিনা জানা নেই। ময়মনসিংহ অঞ্চল পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (এমআরআরআইডিপি) আওতায় কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার ঢাকী ইউনিয়নের আতপাশা বাজার সড়কসহ আতপাশা বাজার লিংক রোড (২ হাজার ৩৮০ মিটার) নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সড়কটি নির্মাণের প্রাক্কলিত মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪ কোটি ৯৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩৬ টাকা। আর চুক্তিমূল্য ছিল ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৩২ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী কাজটি আগামী বছরের ৬ জুলাই শেষ হওয়ার কথা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাজধানীর ই-স্মার্ট কনস্ট্রাকশনের কাজটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। প্রকল্প এলাকা ঘুরে নির্মাণকাজের কোনো আলামতই দেখা যায়নি। এলাকাবাসীও জানে না এ কাজের বিষয়ে।

ঢাকী ইউনিয়নের মাদুপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা হবে, সেটা আপনার কাছ থেকেই জানলাম। কাজ হলে তো নির্মাণসামগ্রী আনার কথা। এমন কিছু এখনো দেখিনি। ঢাকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান রুবেল জানান, পানি কমলে কাজ শুরু করবে বলে ঠিকাদারের লোকজন জানিয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরুর আগেই প্রায় সব বিল কী করে তুলে নিল, সেটা আমার মাথায় আসছে না। এখনো কাজ শুরু হয়নি স্বীকার করে মিঠামইন উপজেলা প্রকৌশলী ফয়জুর রাজ্জাক বলেন, এ-সংক্রান্ত কোনো নথিপত্র মিঠামইন অফিসে নেই।

সবকিছু রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিসে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। কোনো কিছু জানতে হলে নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস থেকে জেনে নিতে পারেন। এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আমিরুল ইসলাম কাজ শুরু না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বিল নিয়েছে কিনা আমার ফাইলে নেই। ই-স্মার্টের নামে অনেকগুলো বিল গেছে। এই কাজের বিল গেছে কিনা আমার জানা নেই। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের টাকায় ম্যানেজ করে ঠিকাদার এই কাজের বিল নিয়ে গেছে, যা নজিরবিহীন। কাজ না করেই পুরো টাকা আত্মসাৎ কিংবা নামেমাত্র কাজটি দেখিয়ে সিংহভাগ টাকা আত্মসাতের অভিপ্রায় থেকে এমনটি হতে পারে। সূত্রটি আরও জানায়, সঠিক অনুসন্ধানে এলজিইডির এমন অনেক কাজের ঘাপলা বেরিয়ে আসবে।

সর্বশেষ খবর