চট্টগ্রাম বন্দরের ডলফিন জেটিতে নোঙর করা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) তেলবাহী জাহাজ ‘বাংলার জ্যোতি’তে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সকাল ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন। তারা হলেন ডেক ক্যাডার সৌরভ কুমার সাহা, ফোরম্যান নুরুল ইসলাম ও ক্যাজুয়াল স্টাফ হারুন। এদিকে, ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসসি এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)। জানা যায়, গতকাল সকালে বন্দরের ডলফিন জেটিতে নোঙর করে থাকা ‘বাংলার জ্যোতি’তে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর পরই জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। এ সময় জাহাজে থাকা নাবিকদের অনেকেই নিরাপদে নেমে আছেন। জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেয়ে নির্বাপণে যোগ দেয় চট্টগ্রাম বন্দর, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং ইস্টার্ন রিফাইনারির নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং টিম। দুপুর ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এর পর সেখান থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিএসসির নির্বাহী পরিচালক ও গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর জাহাজে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিস্ফোরণের কারণ এখনো জানতে পারিনি। স্পটে থাকা তিনজনই নিহত হওয়ার কারণে বিস্ফোরণের কারণ জানা দুরূহ হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরণের একাধিক কারণ থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। এর মধ্যে রয়েছে ঘটনাস্থলে বৈদ্যুতিক স্পার্ক কিংবা গ্যাস জমা হওয়া।’ বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘আগুন নেভাতে চট্টগ্রাম বন্দর, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস কাজ করেছে। আগুন নেভানোর পর ট্যাংকারটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।’ এদিকে, অগ্নিকান্ডের কারণ অনুসন্ধানে দুটি কমিটি গঠন করেছে বিপিসি ও বিএসসি। বিপিসির কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে। কমিটিকে এক কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর বিএসসির সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রধান করা হয়েছে নির্বাহী পরিচালক মো. ইউসুফকে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলার জ্যোতি জাহাজটি বিএসসির মালিকানাধীন একটি পুরনো জাহাজ। জাহাজটি মূলত বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করা মাদার ট্যাংকার ভেসেল থেকে অপরিশোধিত তেল (ক্রুড অয়েল) ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল) পরিবহন করে থাকে। ওই ট্যাংকারে ইআরএলের প্রায় ১২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল ছিল।