প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, জুলাই আন্দোলনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলায় যেসব পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা করছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, হামলার শিকার পরিবারগুলোকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইনি সহায়তাও দেওয়া হবে।
গতকাল সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে দুর্গাপূজা ম প পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মাহফুজ আলম বলেন, আমরা চাইছি দুর্গাপূজার আগেই, আজকালের মধ্যে এ সাহায্য পরিবারগুলোর কাছে পৌঁছে দিতে, যাতে তারা নিরাপদে এবং আনন্দের সঙ্গে পূজা উদ্যাপন করতে পারে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি পূজার ছুটি এক দিন বাড়ানোর কথাও জানান মাহফুজ আলম। কোনো ধরনের দুষ্কৃতকারীকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না-এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, পূজাম পে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পূজার নিরাপত্তায় কমিউনিটি লিডার, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দ ছাড়াও যারা রাষ্ট্রের অখ তায় বিশ্বাসী তারা সবাই থাকবেন। সবাই থেকে দুর্গ পূজা, প্রবারণা পূর্ণিমা, কঠিনচীবর দান উৎসবসহ সব জনগোষ্ঠীর উৎসবকে আনন্দময় করে তুলবেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী হিসেবে সবাই একমত, এক জায়গায় আছি। দেশবিদেশ থেকে কোনোরকম ষড়যন্ত্রকারী স্পেস পাবে না, এটা হচ্ছে আমাদের প্রতিজ্ঞা। তিনি বলেন, যারা দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল করে তুলে সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন, তাদের জেনে রাখা দরকার সরকার খুব নিবিড়ভাবে দেশের সব জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর সঙ্গে নিয়মিত সংলাপের আয়োজন হচ্ছে। নিয়মিত বোঝাপড়া হচ্ছে। সরকার তাদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ওপেন আছে।
মাহফুজ আলম বলেন, গত দুই মাসে হিন্দু সম্প্রদায় যেসব দাবি নিয়ে আমাদের কাছে এসেছে, আমরা সেগুলো পর্যবেক্ষণ করছি। কী ধরনের পদক্ষেপ নিলে তাদের দাবিগুলোর সঙ্গে কাজ করে যেতে পারি আমরা সে চেষ্টা করছি। ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের পরে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন জায়গায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হিন্দুসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। ওই সময় সরকার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ও জনতা এসব হামলা-সংঘাত রুখে দিতে চেষ্টা করেছে। এর পরও অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল থেকে আমরা তাদের সাহায্য-সহযোগিতার চেষ্টা করব। আমরা হয়তো আজকালের মধ্যে সেটি করব; যাতে তারা নিরাপদে ও আনন্দে পূজা উদ্যাপন করতে পারেন। মাহফুজ আলম আরও বলেন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে যারা নিপীড়িত বলে মনে করছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন সেটাও খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি যাতে তারাও নির্বিঘ্নে এবং আনন্দের সঙ্গে প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন করতে পারেন।যে উৎসবটি তারা বন্ধের ঘোষণা দিয়ছেন, আমরা চাইব বাংলাদেশে কোনো উৎসব যেন বন্ধ না হয়। সব জনগোষ্ঠীর দেশে নির্বিঘ্নে আনন্দে উৎসব পালনের অধিকার আছে। সে অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।