শুক্রবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আইনবিদের মুখোমুখি

দিলরুবা শারমীন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী

আইনবিদের মুখোমুখি

সমস্যা

আমার শাশুড়ির অত্যাচারে আমি ঘর-সংসার করতে পারছি না। উঠতে-বসতে আমাকে এমন ধরনের কথা বলেন যে তার উত্তর না দিয়ে পারা যায় না। আর যদি উত্তর দিই, তবে আমার স্বামী আমাকে বেদম মারধর করে। আমি যদি কিছু রান্না করে রাখি সেখানে তিনি গোপনে লবণ বা তেল বেশি ঢেলে দিয়ে পরে খাবার সময় এমন করে যে সবাই আমাকেই দোষ দেয়। আমি কাপড় ধুতে দিলে তিনি রঙিন কাপড় আর সাদা কাপড় মিশিয়ে এমন রং মাখায়ে দেন যেন এমন করার অপরাধে আমাকে আমার স্বামী মার দেন। সংসারের খুব দামি জিনিসগুলো সেদিন তিনি আমার সামনেই ভেঙে সবার কাছে আমার নামে দোষ দিল। এমনকি আমার দেবররা পর্যন্ত এখন আমাকে কথায় কথায় অপমান করে আর সুযোগ পেলেই মারে। আমাকে তারা সেদিন সবাই মিলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমার যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। তাই আমি আমার এক খালাতো বোনের বাসায় এসেছি। সেদিন তারা সেই বাসায় পুলিশ পাঠিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যাবে যে আমি নাকি চোর। পরে পুলিশ সব শুনে চলে গেছে। আমি কী করে এদের হাত থেকে রক্ষা পাব?

-সুলতানা রাজিয়া, খুলনা।

সমাধান

আপনার শাশুড়ির মানসিক সমস্যা। এটা বুঝে তাকে চিকিৎসা করানো দরকার। আপনার স্বামীকে সুন্দর করে শাশুড়ির এই বিষয়টি বোঝান। তাকে সুস্থ করা একজন মানুষ হিসেবে এবং একজন ছেলের বউ হিসেবে আপনারও দায়িত্ব। তবে আপনার স্বামী বা দেবর কেউই আপনার গায়ে হাত তুলতে পারেন না। কোনো মানুষই কোনো মানুষকে মারতে পারেন না। এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। সেই প্রতিবাদটুকু অন্তত করুন। অবশ্যই নিজের ব্যক্তিত্বের আলোকে। আপনার কোথাও থাকার জায়গা না থাকলে নিজেই চেষ্টা করুন নিজের জায়গা করে নিতে। স্বাবলম্বী হওয়ার কোনোই বিকল্প নেই। মানুষ নানাভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে যদি সদিচ্ছা থাকে। আপনি যে চোর নন এটা তো পুলিশ বুঝেছে, তাই আর চিন্তা কী? বরং মানুষের জীবনে চলতি পথের এসব সমস্যার সমাধানই আসে যদি সে আত্মনির্ভরশীল হয়। সব প্রতিবাদ আইনের মাধ্যমে হয় না কিছু প্রতিবাদ আছে যা কাজ দিয়ে করতে হয়। আশা করি আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর