শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

মনোবিদের মুখোমুখি

‘সম্পর্কটিতে সন্দেহপ্রবণতার চেয়ে ঈর্ষাই বেশি’

অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

মনোবিদের মুখোমুখি

সমস্যা

আমার বয়স ২১ বছর। একটি প্রাইভেট ভার্সিটি থেকে বিবিএ করছি। পরিবারের একমাত্র মেয়ে বলে ছোটবেলা থেকেই বাবা-মায়ের অনেক আদরে বড় হয়েছি। পড়াশোনা আর পরিবার ছাড়া আমার তেমন কিছুই ভাবনায় ছিল না। ভার্সিটিতে ওঠার পর একটি ছেলেকে পছন্দ হয়ে যায়। সেই থেকে বন্ধুত্ব আর ফোনে কথা বলা। এক সময় বুঝতে পারলাম আমি প্রেমে পড়ে গেছি। এখন আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। আমার পরিবার বিষয়টা জানত না। প্রথমে সবকিছুই ভালো মতো চলছিল। আমাদের মাঝে ভালোবাসার বন্ধনে প্রায় সময় আমরা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আলোচনা করতাম। আমার ছেলে বন্ধু আছে সে ভালো করেই জানত। কিন্তু কেন জানি সে আমাকে সন্দেহ করতে শুরু করে। সমস্যাটা এতটাই বেশি হয়েছে যে, এখন কথায় কথায় আমায় সন্দেহ করে বসে। আমার পাশে কাউকে দেখলে সে সহ্য করতে পারে না। সে আমাকে সন্দেহ করে। আমি নিজেও একইরকম সন্দেহপ্রবণ হয়ে উঠেছি। এখন আমি কি করব?          - অনন্যা শারমিন, ঢাকা।

 

সমাধান

প্রকৃত ভালোবাসা মনকে উদার করে। বিশ্বাসী করে। আস্থা বাড়ায় মনের। সবই ঠিক আছে। কিন্তু গোপনে কোনো এক ছিদ্র পথে মনের ভিতর ঢুকে যেতে পারে ঈর্ষা। তীব্র পাওয়ার আকুলতা থেকে, কেবলই ‘আমার আমার’ এ উপলব্ধি থেকে ইচ্ছা কখনো পূরণ হয় না। ‘অপূর্ণ ইচ্ছার’ ফাঁক গলিয়ে ঈর্ষা গোপনে বাসা বাঁধে বুকের ভিতর। ঈর্ষা জমে জমে পাহাড় প্রমাণ হয়ে সন্দেহে রূপান্তরিত হতে পারে। ‘ধ্বংসাÍক আবেগের জম্ন দিতে পারে ঈর্ষা। এ আবেগ নষ্ট করে শক্তি, নষ্ট করে সময়।’ তাই ঈর্ষা এবং সন্দেহ ভালোবাসার চরমতম শত্রু। প্রকৃতি টেনে নিয়ে যায় মানুষকে, মানুষের মনকেও। মনের ভিতরের গোপন ক্রিয়া ভালোবাসা হজম করে নেয় প্রকৃতি। তাই বিশ্বব্যাপী দেখা যায় ভালোবাসা পাত্র থেকে পাত্রে সঞ্চারিত হয়। এ কারণেই মানুষ ঈর্ষাপ্রবণ, সন্দেহপ্রবণ। দোষ দেব কাকে? মানুষকে? নাকি প্রকৃতিকে? কার নেশার টানে প্রকম্পিত হয় আপন ভুবন? প্রকৃতির টানে নয় কী? মূলত যতই উদার হোক না কেন, ঈর্ষা এবং সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠতে কমই পারে মানুষ। এ জন্যই প্রশ্ন তোলা যায়, এক জীবনে কজনকে ভালোবাসতে পারে মানুষ? পাত্র ভেদে, সম্পর্ক ভেদে ভালোবাসার স্বরূপ আলাদা। তাই ভালোবাসার মানুষেরও কমতি নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর