শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

হৃদয়ে বাংলাদেশ

হৃদয়ে বাংলাদেশ

মডেল : স্নিগ্ধা সাদিয়া, শিমু ও সনি রহমান পোশাক : কাপড়-ই-বাংলা ছবি: নেওয়াজ রাহুল মেকওভার : ওমেন্স ওয়ার্ল্ড

মোড়ের দোকান থেকে শুরু করে বাড়ির ছাদ। এমনকি গ্রামগঞ্জেও পাল্টে যাওয়া দৃশ্যটা চোখে পড়ে। চারদিকে কেবল পতাকা আর পতাকা। ডিসেম্বর এলেই বিজয়ের আনন্দে লাল সবুজে ছেয়ে যায় চারপাশ। কেবল পতাকাই নয়, এমন উপলক্ষকে সামনে রেখে পাল্টে যায় বেশভূষাও। এক যুগ ধরে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো পোশাকে নানা উৎসবের আবহ ফুটিয়ে তুলছে। ব্যতিক্রম নয় বিজয় দিবসও। ১৬ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে চারদিকে লাল সবুজের যে সমারোহ তার ছোঁয়া পড়েছে পোশাকের বাজারেও। সবার হৃদয়ের বাংলাদেশটা উঠে আসছে পোশাকে। আরও জানাচ্ছেন - ফেরদৌস আরা

ফ্যাশনে পোশাকের পরিবর্তনের ধারা চলে আসছে প্রায় এক দশক ধরে। কোনো উৎসবই এখন বাদ যায় না পোশাকের আয়োজনে। প্রতিটি ফ্যাশন হাউসই এখন তাদের তৈরি পোশাকে আনে উৎসবভিত্তিক আমেজ।

এসেছে বিজয়ের মাস। কড়া নাড়ছে বিজয় দিবস। ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে বুটিক হাউসগুলো নিয়ে এসেছে লাল-সবুজের পোশাক। আবার অনেকেই নিজের সৃজনশীলতায় তৈরি করিয়ে নিচ্ছেন বিজয় দিবসের মানানসই পোশাক। পাঞ্জাবিতে ঐতিহাসিক বিভিন্ন চিত্র আঁকার মাধ্যমে শুরু হলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। টি-শার্ট, শাড়ি, ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ, টপস এমনকি চাদরেও উঠে আসছে লাল-সবুজের চেতনা। এ ছাড়া ব্যাগ আর রিস্ট ব্যান্ডেও থাকছে লাল-সবুজের ছোঁয়া।

বিজয়ের মাসে পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোতে থাকে বিশেষ আয়োজন। শীতের সময় বলে পোশাক নকশাকারদের গরম কাপড়ের ওপর নজর বেশি। লাল-সবুজের আঁচড়ে পোশাকগুলো হয়ে যায় বিজয়োৎসবের একেকটি পতাকা। বিজয়ের মাসকে কেন্দ্র করে দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো নিজেদের পোশাকে এনেছে লাল-সবুজের বিজয়ের চেতনা। শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, কুর্তা, ফতুয়া, স্কার্ট কিংবা শিশুদের জামার ডিজাইনে আনা হয়েছে বিজয়ের আমেজ।

এ বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পতাকা রঙের পোশাকগুলোর কাপড় হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে সুতি। অনেকে আবার লাল-সবুজ রঙের পাশাপাশি সাদা, কালো, হলুদ, নীল, কমলা ইত্যাদি রঙের সংমিশ্রণেও পোশাকে নিয়ে আসছেন বিজয় উৎসবের আমেজ।

বিজয়ের মাসজুড়ে লাল-সবুজকে নিয়েই যত আয়োজন। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস বিজয়ের আমেজে শাড়ি, ফতুয়া, পাঞ্জাবি, কুর্তা, টি-শার্ট ইত্যাদিতে তুলে ধরেছে মুক্তিযুদ্ধের নানা স্লোগান এবং লাল-সবুজ রং। পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে মোটা সুতি ও খাদি কাপড়। করা হয়েছে টাইডাই, ব্লক, বাটিক, অ্যাপলিক, ক্যাটওয়াক, স্ক্রিনপ্রিন্ট।

বিজয়ের মাসে বিজয় উৎসবকে কেন্দ্র করে তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মানুষের শৌখিনতা ও পছন্দের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই একটি বিশেষ মাস বা দিনের পোশাক তৈরি করছেন তারা। এই উৎসবের আমেজে বাদ পড়ছে না শিশুও।

 

বিক্রেতাদের মতে, ছোট শিশুদের ফ্যাশনে লালের ব্যবহার বেশি। তবে লাল-সবুজের মিশ্রণেও সাজছে তারা। তবে গালে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পতাকা এঁকে অনেকেই শিশুকে বিজয়ের আমেজ বুঝতে উদ্বুদ্ধ করেন। তাই শিশুদের সাজে যোগ হয় ভিন্নমাত্রা।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১৬ ডিসেম্বর অর্থাৎ বিজয় দিবসকে সামনে রেখে পোশাক কিনতে মার্কেটগুলোতে আসছেন ক্রেতারা। ফ্যাশন হাউসগুলোয় ঢুকতেই চোখে পড়ে লাল-সবুজ পোশাকের গায়ে খেলা করছে অসংখ্য কথামালা। কোথাও লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’, কোথাও ‘ও আমার দেশের মাটি’। এর সবকিছুই মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা।

লাল-সবুজের বাহারি আয়োজন নিয়ে হাজির দেশি ফ্যাশনের পুরনো ও পরিচিত আজিজ সুপার মার্কেটের ফ্যাশন হাউসগুলো। বিজয়ের আনন্দকে পোশাকি ভাষায় ফুটিয়ে তুলতে এখানকার প্রায় প্রতিটি শো-রুমেই এখন লাল-সবুজের ছোঁয়া।

অনেকে আবার লাল-সবুজ রঙের পাশাপাশি সাদা, কালো, হলুদ, নীল, কমলা ইত্যাদি রঙের সংমিশ্রণেও পোশাকে নিয়ে আসছেন বিজয় উৎসবের আমেজ। মোটিফের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে প্রাচুর্য। বিজয়ের পোশাকে উঠে আসছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, কবিতা, স্লোগান, মিছিল, স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি, গৌরবোজ্জ্বল বিভিন্ন মুহূর্ত, দেশাÍবোধক গানের লাইন ও বর্ণমালা।

এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ইতিহাস পর্যালোচনা, জাতীয় বীরদের পরিচয়-

সংবলিত পোশাক বা শিল্পীর নকশা করা শাড়ি বিজয় দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য তুলে ধরে। বেছে নিতে পারেন এগুলোও।

ডিজাইনাররা মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তাৎপর্য কিংবা গৌরবময় বিষয় ফুটিয়ে তুলছেন পোশাকে। জাতীয় দিবসগুলোয় তাদের ডিজাইনের একটা বড় অংশজুড়ে দেশাÍবোধ ও চেতনাবোধের প্রকাশ এ প্রজম্মকে করেছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ। পাঞ্জাবিতে ঐতিহাসিক বিভিন্ন চিত্র আঁকার মাধ্যমে শুরু হলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপকভাবে। টি-শার্ট, শাড়ি, ফতুয়া, সালোয়ার-কামিজ, টপস এমনকি চাদরেও উঠে আসছে লাল-সবুজের চেতনা। অনেকে আবার লাল-সবুজ রঙের পাশাপাশি সাদা, কালো, হলুদ, নীল, কমলা ইত্যাদি রঙের সংমিশ্রণেও পোশাকে নিয়ে আসছে বিজয় উৎসবের আমেজ। মোটিফের ক্ষেত্রেও দেখা যাচ্ছে প্রাচুর্যতা। বিজয়ের পোশাকে উঠে আসছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, কবিতা, স্লোগান, মিছিল, স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি, গৌরবোজ্জ্বল বিভিন্ন মুহূর্ত, দেশাÍবোধক গানের লাইন ও বর্ণমালা। এ ছাড়া জাতীয় বীরদের পরিচয় সংবলিত পোশাক বা শিল্পীর নকশা করা শাড়ি বিজয় দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য তুলে ধরে। বেছে নিতে পারেন এগুলোও।

এ ছাড়া প্রিয়জনকে উপহার দিতে পারেন দেশাÍবোধক গানের লাইন কিংবা বর্ণমালা, মগ, লাল-সবুজ চাবির রিং কিংবা বিভিন্ন উপাদান। উৎসবের আমেজে পূর্ণতা দিতে লাল-সবুজ পোশাকের পাশাপাশি কাচের চুড়ি কিংবা বড় লাল টিপ পরতে পারেন। কে-ক্র্যাফট, রঙ, নগরদোলা, বিবিয়ানা, অঞ্জনস, বাংলার মেলাসহ সব ফ্যাশন হাউসেই পেয়ে যাবেন লাল-সবুজ পোশাক ও অনুষঙ্গ। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টি-শার্ট চাইলে চলে যেতে পারেন শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে। আজিজে ছেলেদের জন্য রয়েছে লাল-সবুজের মিশ্রণে টি-শার্ট। দাম ২৫০-৫৫০ টাকা। এ ছাড়া থাকছে ফতুয়া ও পাঞ্জাবি। মেয়েদের জন্য রয়েছে ফতুয়া, সালোয়ার কামিজ, শাল ইত্যাদি। দাম পড়বে ৪০০-৩৫০০ টাকা।

এ ছাড়া বসুন্ধরা সিটির দেশীদশে আয়োজন করা হয়েছে বিজয়ের পণ্য সমাহার। দেশীদশের সব শো-রুমেই বিজয়ের উল্লাস। এ ছাড়া রয়েছে আড়ং, ওজিসহ নানা বুটিক হাউস। শাড়ি, পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, ওড়না, এন্টিকের গহনা উপহারের জন্য মগ পাওয়া যাচ্ছে এখানে। যেগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে লাল-সবুজের মিশ্রণ। তবে, এবার মেতে উঠুন বিজয়ের আনন্দে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর