শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

আইনবিদের মুখোমুখি

বিয়ের সময় জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট (যদি থাকে) এর কপি অবশ্যই নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজীকে দেখাতে হবে। এ ছাড়া মুসলিম বিয়ে যেহেতু একটি সিভিল কনট্রাক্ট তাই এখানে দুই পক্ষেরই সাক্ষী লাগবে। মুসলিম আইন অনুযায়ী স্বামী স্ত্রীকে দেনমোহরানা পরিশোধ করতেই হবে। নিকাহনামার ১৮ নম্বর কলামে স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়েছেন কিনা এই বিষয়ে উল্লেখ আছে। বিয়ে সিভিল কন্ট্রাক্ট তাই, চুক্তিগুলো যথাযথভাবে পূরণ করবেন।

দিলরুবা শারমিন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী

আইনবিদের মুখোমুখি

সমস্যা

আমরা দুজনই দুজনকে খুব ভালোবাসি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সঙ্গে পড়াশোনা করছি। কিন্তু দীর্ঘদিনের সম্পর্কের জন্য আমরা একে অপরের খুব কাছে এসে গিয়েছি। আমাদের এই সম্পর্কটি দুই পরিবারের সবাই জানে। আমাদের ইচ্ছে, দুটি পরিবার একই আমাদের সুদূর ভবিষ্যতের সুখ কামনা করে দোয়া করুক। আমরা বিয়ে করতে চাই কিন্তু, আমাদের পরিবার কিছুতেই বিয়েতে রাজি নয়। দুই পরিবারের মাঝে আমাদের ভালোবাসার অকাল সমাপ্ত মেনে নিতে পারছি না। তাই আমরা নিজেরাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু এর সঠিক নিয়মাবলি আমাদের জানা নেই। এখন কীভাবে কি করব এই বিষয়ে আপনার পরামর্শ দরকার।

ইমতিয়াজ ও তিলোত্তমা, ঢাকা।

 

সমাধান

আপনারা বাংলাদেশ মুসলিম ম্যারেজ অ্যান্ড ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট ১৯৭৪ অনুযায়ী কাজী অফিসে গিয়ে একজন রেজিস্টার্ড কাজীর দ্বারা বিয়ে করতে পারেন। আপনারা যেহেতু সাবালক/সাবালিকা তাই স্বেচ্ছায় বিয়েতে কোনো সমস্যা নেই। তবে, বিয়ের সময় আপনাদের জন্ম সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট (যদি থাকে) এর কপি অবশ্যই নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজীকে দেখাতে হবে। এ ছাড়া মুসলিম বিয়ে যেহেতু একটি সিভিল কনট্রাক্ট তাই এখানে দুই পক্ষেরই সাক্ষী লাগবে। বিয়ের জন্য উকিল বাবা লাগবে। সাধারণত কাজী সাহেবরা বলেন যে, এসব কিছুই লাগবে না আমরাই ঠিক করে দিব। কিন্তু একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে আপনারা কিছুতেই এই ভুল করবেন না। কারণ, ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হলে তখন এই কাজীর দেওয়া সাক্ষীরা কেউই আপনাদের পাশে এসে দাঁড়াবে না। কাবিন নামার প্রতিটি কলাম নিজেরা পড়ে, বুঝে তারপর কাজীর বালাম বইতে সই করবেন। এ ছাড়াও আপনারা একজন পারিবারিক আইন বিদের সাহায্য নিয়ে আপনাদের বিয়ের একটি এফিডেভিট করিয়ে নোটারি পাবলিক দ্বারা নোটারাইজড করাতে পারেন। দেনমোহরানা নির্ধারণের বিষয়টি অবশ্যই নিজেদের মাঝে আলোচনা করে নিবেন। এখানে আবেগের বশবর্তী হয়ে কিছুই করবেন না। কারণ, মুসলিম আইন অনুযায়ী স্বামী তার বিয়ে করা স্ত্রীকে দেনমোহরানা পরিশোধ করতেই হবে। নিকাহ নামার ১৮ নম্বর কলাম এ স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়েছেন কিনা এই বিষয়ে উল্লেখ আছে। এই কলামটি আপনাদের যৌথ সিদ্ধান্ত মোতাবেক পূরণ করবেন। বিয়ে একটি সিভিল কন্ট্রাক্ট তাই, চুক্তিগুলো যথাযথভাবে পূরণ করবেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর