ওয়াক্সিং পন্থা শরীরের অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে বেশ জনপ্রিয়। তাই তো পারলারগুলোতে ওয়াক্সিং প্রত্যাশীদের হরহামেশাই ভিড় লেগে থাকে। ঘরোয়াভাবেও ওয়াক্সিং করাতে রইল পরামর্শ।
হাত-পায়ে লোম কিংবা ঠোঁটের ওপর হালকা গোঁফ! কে চায় এসব? কিন্তু লোম দূর করাতে ঝক্কিও কম নয়। রেজর চালালে তো বিপদই। আবার ওয়াক্সিং ন্যাচারাল হলেও যন্ত্রণাদায়ক। তবে যত যাই হোক, প্রাচীন মিসরীয় এই সৌন্দর্যচর্চা আজও অমলিন। যদিও সে সময় ত্বক কোমল ও পরিষ্কার রাখতে নারী-পুরুষ সবাই ব্যবহার করত। বর্তমানেও ব্যতিক্রম নয়। আধুনিক পারলারগুলো ছাড়া বাড়িতেও ন্যাচারাল উপায়ে লোম দূর করতে পারেন।
অতিরিক্ত লোম শরীরে অস্বস্তি তৈরি করে। ত্বক হয়ে ওঠে খসখসে। আবার তৈলাক্ত ত্বকে পশমের গোড়ায় ময়লা জমে ইনফেকশনও সৃষ্টি করে। এমনটাই মনে করেন বিউটি জোন ওমেন্স ওয়ার্ল্ডের পরিচালক ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারনাজ আলম। তিনি বলেন, ‘সবার ত্বক এক নয়। কারও লোম বাড়ে দ্রুত, কারও আবার কম। মূূলত বয়স এবং ত্বকের ধরন বুঝে ওয়াক্সিং করানো উচিত। তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা ত্বক পরিষ্কার করে পাউডার ব্যবহার করে ওয়াক্সিং করান। তবে শুষ্ক ত্বক হলে পাউডার এড়িয়ে চলুন। আবার ওয়াক্সিং করানোর প্রথম শর্ত হলো অবশ্যই ব্যবহারকারীর বয়স ১৭ বছর হতে হবে। এর আগে আন্ডার আর্মস ছাড়া হাত-পায়ের লোম না তোলাই ভালো।
অনেকেই সময়ের অভাবে পারলারে যেতে পারেন না। তারা ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওয়াক্সিং সেরে নিতে পারেন।
♦ পাত্রে খানিকটা চিনি চুলায় গরম করে ক্যারামেল তৈরি করে সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। মিশ্রণ ঘন হয়ে এলে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে একটি বোতলে ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করুন। মিশ্রণটি দিয়ে ঘরে বসেই ওয়াক্সিং করা যাবে।
কীভাবে ওয়াক্সিং করাবেন
ওয়াক্সিং করার শুরুতেই নির্দিষ্ট স্থানে পাউডার দিয়ে নিন। এর ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠবে। একটি কাঠের চামচ দিয়ে মিশ্রণটি হাত-পায়ে লাগিয়ে নিন। মিশ্রণটির ওপর সুবিধাজনক আকৃতির লিনেন কিংবা নরম সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। কাপড়টি শুকিয়ে এলে সেটি টান দিয়ে তুলে ফেলুন।
এ ছাড়া ঠোঁটের ওপর হালকা গোঁফে পুরো চেহারাটাই কালচে দেখায়। এই গোঁফ দূর করতে নিচের পদ্ধতি ব্যবহার করুন।
♦ ঠোঁটের ওপর অবাঞ্ছিত লোম দূর করতে এক টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া ও এক টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁটের ওপর লাগান। শুকিয়ে গেলে আলতো করে ঘষে তুলে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। টানা চার সপ্তাহ ব্যবহারে উপকার পাবেন।
♦ ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার ও চিনি মিশিয়ে নিন। এই পেস্ট আপার লিপে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে পিল অফ করে নিন। টানা এক মাস সপ্তাহে দুই দিন এটা করলে সুফল পাবেন।
ওয়াক্সের পর ত্বকের যত্ন
ওয়াক্সিংয়ের পর অবশ্যই হাত-পায়ের যত্ন নিতে হবে। লোম তুলে ফেলার ফলে শরীরের স্থানটি লাল হয়ে যায়, অনেক সময় জ্বালাপোড়া করে। স্থানটিতে কিছুক্ষণ বরফ ঘষতে পারেন। কিংবা আফটার শেভিং ক্রিম লাগিয়ে রাখতে পারেন। ওয়াক্স করার পরপরই রোদে বের হবেন না। একান্ত প্রয়োজনে বের হলে খেয়াল রাখতে হবে যেন ওয়াক্স করা ত্বকে রোদ না লাগে। তাছাড়া অবশ্যই সানস্ক্রিন মেখে ঘর থেকে বেরোতে হবে। ওয়াক্সিংয়ের পর ত্বকে অ্যালার্জি এবং লাল হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ট্যালকম পাউডার লাগিয়ে নিতে হবে।