২৫ জুন, ২০১৮ ২০:১৭

ভোটের অপেক্ষায় নগরবাসী

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর :

ভোটের অপেক্ষায় নগরবাসী

অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্নের লক্ষ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে গাজীপুর নগরীর প্রতিটি এলাকা। রবিবার মধ্যরাত থেকে শেষ হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারণা। একারণে নেই নগরীতের প্রার্থীদের কোন আনা গোনা। বহিরাগতদের অবস্থানের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা ও আঞ্চলিক সড়কের যান চলাচলে বিধি নিষেধ থাকায় নির্বাচনী এলাকায় যানবাহন অন্য দিনের তুলনায় চলছে কম। আগামীকাল ভোটের দিন বৃষ্টিপাত হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলাবদ্ধতায় ভোট গ্রহণ অনেকটা চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। আর ভোটের ফলাফল কেমন হয় তা নিয়ে টেনশনে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। এরই মধ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।

রিটার্নিং কার্যালয়ের তথ্যমতে, রবিবার মধ্যরাত থেকে সকল ধরনের নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বহিরাগতদের অবস্থানের ব্যাপারে নিষেধজ্ঞা থাকায় সিটি এলাকায় কেন্দ্রীয় ও ভিআইপিদের আগমন বন্ধ রয়েছে। নির্বাচনী এলাকায় আঞ্চলিক সড়কে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট গাড়ি ছাড়া অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বিধি নিষেধ আরোপ করেছে নির্বাচন কমিশন। একারণে সকাল থেকে আঞ্চলিক সড়কগুলোতে তেমন যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। সোমবার সকাল থেকেই পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রহরায় নির্বাচনী সামগ্রী বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠনো হয়। ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা নিজ নিজ কেন্দ্রের মালামাল বুঝে নিয়ে ভোট কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছেন। কেন্দ্রে নিরাপত্তায় ১২ হাজার আনসার ও পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছাড়াও সড়কে সড়কে টহল জোরদারের লক্ষে বিজিবির ২৯ প্লাটুন সদস্য কাজ করছে। 

বিজিবির ৭ প্লাটুন কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায়, ১০ প্লাটুন টঙ্গী এলাকায় এবং ১২ প্লাটুন জয়দেবপুর, বাসন চান্দনা চৌরাস্তা ও কাউলতিয়া এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ান আনসার সমন্বয়ে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৮টি মোবাইল ফোর্স, ২০টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। নির্বাচনের আগে ও পরে চার দিন ৫৭টি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়া ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। তারা ২৪ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত নগরীতে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনী এলাকায় র‌্যাবের ৬শ' সদস্য ৫৭টি টিমে ভাগ হয়ে কাজ শুরু করেছে। 

প্রধান দুই মেয়র প্রার্থীর ভোট প্রদান : 
আওয়ামীলীগ মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম তার নিজ এলাকা কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার টঙ্গীর আউচ পাড়া এলাকার বসির উদ্দিন উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রে ভোট দেবেন। হাসান উদ্দিন সরকার তার কেন্দ্রে সকাল ৮টায় এবং জাহাঙ্গীর আলম কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সকাল ৮ থেকে সাড়ে ৮টার ভেতর ভোট দেবেন বলে জানা গেছে। 

প্রায় ৩৩০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। এবার এর দ্বিতীয় নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী গত ২৪ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়। ১৫ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে স্থগিতাদেশ এবং পরে আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৮ জুন থেকে পুনরায় ২য় পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয় এবং সে অনুযায়ী ২৬ জুন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৪২৫টি যার মধ্যে ৮০ ভাগ ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এতে ৭ জন মেয়র ছাড়াও ৫৭টি ওয়ার্ডে ২৫৪ জন কাউন্সিলর ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৮৪ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। 

 

বিডি প্রতিদিন/২৫ জুন ২০১৮/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর