রবিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

বাউলরা অস্তিত্ব রক্ষায় যুদ্ধ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত

আলম দেওয়ান লোকসংগীতশিল্পী

বাউলরা অস্তিত্ব রক্ষায় যুদ্ধ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত

প্রখ্যাত সুরকার ও গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের অনেক জনপ্রিয় গান আছে। তিনি যদি শুধু এর রয়্যালটি পেতেন তবে ঢাকায় তার ২০টি বাড়ি থাকত। লোকগীতি হচ্ছে সংগীতের মূলধারা। অথচ লোকগানের শিল্পীরা এখন খুবই অবহেলিত অবস্থায় আছেন। তারা নিজেদের গানের জন্য রয়্যালটি পান না। আমি মনে করি সরকার যদি শিল্পীদের রয়্যালটির ব্যবস্থা করে তবে অন্যরাও এটি দিতে বাধ্য হবে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সংশ্লিষ্টরা আমাদের রয়্যালটি দেবেন বা দিচ্ছেন বলে ঝুলিয়ে রাখেন। আমরা বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ শুধু ঝুলছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মনে আছে, আমি একবার গান গেয়ে ৭০ টাকার চেক পেয়েছিলাম। ৭০ টাকার চেক! বিষয়টি উপহাসের মতোই বটে। এ থেকে গান গাওয়ার প্রতি অনীহা তৈরি হয়। কিন্তু শিল্পী মন গানের ওপর অভিমান করে কতক্ষণ থাকবে! গান করছি এখনো।

এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি। এরই মধ্যে আমরা অনেক মৌলিক গান হারিয়েছি। বাউলরা নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য যুদ্ধ করছেন। মূলত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। এখন একটি শ্রেণি আছে যারা বাউল শিল্পীদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবেন। তারা নানাভাবে বাউলদের লাঞ্ছিত করছেন। আশির দশকে যখন ক্যাসেট কোম্পানিগুলোর যাত্রা শুরু হয় তখন থেকে শিল্পীদের ঠকানো শুরু হয়। এখন মোবাইল কোম্পানিগুলো সংগীত শিল্পীদের ঠকানো শুরু করেছে। বাউলরা সরল মনের, তাদের সঙ্গে যারা প্রতারণা করে তারা মানুষ নয়। আর এখন অনেক আধুনিক গানের শিল্পী শখের বশে বাউল গান করেন।  তারা বাউলদের গান গেয়ে ক্যাসেট কাভারে লিখে দেন, সুর-সংগীত সংগৃহীত।  একে তো রয়্যালিটি দিলেন না, দ্বিতীয়ত স্বীকৃতিও দিলেন না। আমরা এ অবস্থায় কীভাবে কাজ করে যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর