১৮ জুন, ২০২৩ ১২:২২

২৩ মণের রাজাবাবু, দাম ১০ লাখ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

২৩ মণের রাজাবাবু, দাম ১০ লাখ

গরুটির নাম রাখা হয়েছে ‘রাজাবাবু’

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার মো. জসিম মোল্লা (৩০) জীবিকার তাগিদে থাকেন প্রবাসে। স্ত্রী হালিমা খাতুন গৃহিণী। গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি গৃহবধূ হালিমা খাতুন একটি ষাঁড় গরুর লালন-পালন করেছেন।

ছয় বছরের সংসার জীবনে এখনো তাদের কোলজুড়ে কোনো সন্তান আসেনি। এজন্য তিনি প্রায় চার বছর ধরে সন্তানের মতোই গরুটিকে পরিচর্যা করেছেন। আদর করে গরুটির নামও রেখেছেন ‘রাজাবাবু’।

এই দম্পতি উপজেলার সদকী ইউনিয়নের উত্তর মূলগ্রামের বাসিন্দা। ‘রাজাবাবু’ নামে ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুর উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফিট ১০ ইঞ্চি এবং লেজ থেকে মাথার দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফিট। যার ওজন আনুমানিক ৯৫৭ কেজি অর্থাৎ ২৩ মণের বেশি। প্রবাসীর স্ত্রী গরুটির দাম চাচ্ছেন ১০ লাখ টাকা।

জানা গেছে, প্রায় ৬ বছর আগে উত্তর মূলগ্রামের মৃত সামছদ্দিন মোল্লার ছেলে জসিম মোল্লার সাথে একই এলাকার মো. চাঁদ আলীর মেয়ে হালিমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরের বছর জসিম মোল্লা জীবিকার তাগিদে চলে গেছেন ইরাকে। আর স্ত্রী হালিমাকে তার শ্বশুর ফ্রিজিয়ান বাছুরসহ একটি গাভী গরু কিনে দেন। সেই বাছুর গরুটিই আজকের বিশাল ষাঁড় গরু ‘রাজাবাবু’। প্রায় চার বছর ধরে ঘাস, খড়, ছাল, ছোলা, ভুট্টাসহ বিভিন্ন খাবার দিয়ে নিজের সন্তানের মতোই গরুটিকে পালন করছেন হালিমা খাতুন। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার খাবার খায় গরুটি। এটিকে ঘিরে হালিমার চোখে এখন নানান স্বপ্ন।

এদিকে, কুরাবানির ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্রেতাদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। এনিয়ে তারা একটু দুশ্চিন্তায় আছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, টিনশেডের পাকা ঘরের মেঝের সামনে একটি আমগাছ রয়েছে। সেখানে দড়ি দিয়ে বাঁধা রয়েছে কালো রঙের রাজাবাবু। তাকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন প্রবাসীর স্ত্রী হালিমা খাতুন।

এসময় হালিমা খাতুন বলেন, তিনি প্রায় চার বছর ধরে নিজ সন্তানের মতোই গরুটিকে লালন-পালন করছেন। দেখতে সুন্দর ও বিশাল দেহের অধিকারী হওয়ায় তিনি আদর করে নাম রেখেছেন রাজাবাবু। তার প্রতিমাসে ঘাস, খড়, ছোলা, গম, ধানের গুড়াসহ গরুর খাবাবের জন্য প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রায় ২৩ মণ ওজনের গরুটিকে তিনি ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গরু বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি প্রায় এক লাখ টাকার মধ্যে একটি গরু কিনবেন। বাকি টাকা দিয়ে তিনি জমি কিনবেন, সেখানে বাড়ি বানাবেন।

প্রবাসীর শ্বশুর মো. চাঁদ আলী বলেন, চার বছর আগে তিনিই মেয়ে-জামাইকে বাছুরসহ একটি গাভী গরু কিনে দিয়েছিলেন। সেই বাছুর গরুটিই এখন হাতির মতো দেখতে লাগে। বাড়ি থেকেই তিনি গরুটিকে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চান।

তার ভাষ্য, ফ্রিজিয়ান জাতের এই গরুর উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফিট ১০ ইঞ্চি এবং লেজ থেকে মাথার দৈর্ঘ্য প্রায় আট ফিট। যার ওজন আনুমানিক ৯৫৭ কেজি অর্থাৎ ২৩ মণের বেশি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে প্রবাসী জসিম মোল্লা জানান, তার বাড়িতে তেমন লোকজন নেই। বড় গরু বাজারে আনা নেওয়া সমস্যা। আবার ঈদও চলে আসছে। বেচা-বিক্রি নিয়ে তিনি খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

উপজেলা প্রাণীসস্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, একটি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়নে এবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ৩ হাজার ৫৯৭টি খামার ও বাসাবাড়িতে মোট প্রায় ২৩ হাজার ৫৬৬টি স্বাস্থ্যসম্মত পশু প্রস্তুত করা হয়েছে, যা উপজেলায় চাহিদার তুলনায় ১০ হাজার ৯৩৫টি পশু বেশি রয়েছে। তিনি সব সময় পশু ও মালিকদের সার্বিক খোঁজখবর রাখছেন।

বিডি প্রতিদিন/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর