২৪ জুন, ২০২৩ ১৪:৪০

হাটে প্রচুর গরু, বিক্রি কম

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

হাটে প্রচুর গরু, বিক্রি কম

ফাইল ছবি

ঈদুল আজহা সামনে রেখে দিনাজপুরের বিভিন্ন স্থানে বসেছে গরু-ছাগলের হাট। ক্রেতা এবং পশুর জোগান পর্যাপ্ত থাকলেও বেচাকেনা হচ্ছে কম। ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের চেয়ে এবার গরুর দাম অনেক বেশি। খামারিরা জানান, পশু খাদ্যের দাম বাড়ায় পালনে খরচ বেড়েছে। তারা বলছেন, হাট জমে উঠলেও বিক্রি এখনো বাড়েনি। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে বিক্রি তত বাড়বে। দিনাজপুরের ১৩ উপজেলায় ছোট-বড় মিলে ৬৬টি হাট বসে। বৃহস্পতিবার ছিল রানীরবন্দর ও দিনাজপুর শহরের রেলবাজার হাট। নানা ধরনের গরু-ছাগলে এ দিন হাট ভরে গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, রানীরবন্দর হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতা এবং ব্যবসায়ী এসেছেন। তাদের কেউ কেউ গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আলোকডিহি গ্রামের খামারি আবদুল্লাহ হাটে পাঁচটি ষাঁড় এনেছেন। তিনি প্রতিটি গরুর দাম হাঁকছিলেন ৭৫ থেকে ৯৫ হাজার টাকা। অন্য খামারি বেলাল জানান, গরুর খাবারের দাম বেশি। বছরে একটি গরু বড় করতে ১৪-১৮ হাজার টাকা খরচ হয়। এ অবস্থায় প্রতিটি গরু গড়ে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে না পারলে লাভ হবে না। গোয়ালডিহি গ্রামের রহিমদ্দিন বলেন, কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য গরু এনেছেন। গরুটি ছয় মাস আগে কিনেছিলেন ৪০ হাজার টাকায়। এখন দাম চাচ্ছেন ৭৫ হাজার। ক্রেতারা ৬০-৬৫ হাজার টাকা বলছেন। রানীরবন্দর হাটে আসা গরু ব্যবসায়ী জাবেদ বলেন, গত বছর যে গরু ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে সে গরু এবার ৬৫-৭০ হাজারে কিনতে হচ্ছে। হাটে অনেক গরু এলেও দাম কমেনি। ঈদের আরও কয়েক দিন আছে। সামনের হাটে দাম কম হতে পারে বলে তিনি বাড়ি চলে যান। হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান বলেন, মাইকিং করে গরু ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন জানান, দিনাজপুরে এবার ২ লাখ ৫৯ হাজার ১৩৮টি পশু মোটাতাজা করা হয়েছে। জেলায় চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার ৫০২টি।

সিরাজগঞ্জে প্রস্তুত ৬ লাখ গবাদিপশু : সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গবাদিপশুর রাজধানী খ্যাত সিরাজগঞ্জের খামারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশি খাদ্যে গবাদিপশুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করে কোরবানির জন্য উপযুক্ত করে তুলেছেন তারা। চড়াদামে গো-খাদ্যে কিনে গবাদিপশু পালন করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে না পারলে লোকসান গুনতে হবে তাদের। এ ছাড়া ভারত থেকে অবৈধ পথে যেন গরু না আসতে পারে সেজন্য সরকারের কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন খামারিরা।

জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলা সদরসহ শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, তাড়াশ, কামারখন্দ উপজেলায় ১৩ হাজারের অধিক ছোট-বড় খামার গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে বাড়িতে এক-দুটি করে গরু লালন-পালন করছেন অনেকে। এ বছর জেলার খামারগুলোতে কোরবানির জন্য ৬ লাখ ১২ হাজার গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। খামারিরা দেশি খাবার নেপিয়ার ঘাসের পাশাপাশি চালের কুড়া, খুদ, ডালের ভুসি, অ্যাংকার ও গমের ভুসি খাইয়ে গরু হৃষ্টপুষ্ট করছেন। সদর উপজেলার তালুকদার ডেইরি ফার্মের ম্যানেজার জান্নাতুল মারুফ জানান, প্রায় ৫০টি গরু কোরবানির জন্য লালন-পালন করছেন। এখন পর্যন্ত ২০টি বিক্রি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার আসছেন। গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরুর দামও একটু বেশি। ছোয়ামনি ডেইরি ফার্মের মালিক আবদুস সাত্তার জানান, এবার গরুর কাক্সিক্ষত দাম না পেলে ক্ষুদ্র খামারিরা খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন জানান, এ বছর হাটের পাশাপাশি অনলাইনে পশু বিক্রির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া হাটে যাতে গরু অসুস্থ না হয় সেজন্য মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা রয়েছে। ভারত থেকে যাতে গরু না আসে সে জন্য প্রশাসনকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর