২৫ জুন, ২০২৩ ১৬:২১

হবিগঞ্জে শেষ মুহূর্তে গবাদি পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারিরা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

হবিগঞ্জে শেষ মুহূর্তে গবাদি পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারিরা

দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। আর এই কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে একেবারে শেষ মুহূর্তে গবাদি পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলার খামারিরা। দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে খামারিরা হাটে তোলার জন্য প্রস্তুত করছেন তাদের গৃহপালিত গরু, ছালগ ও ভেড়াসহ পশুগুলো। কোন ধরণের ক্যামিকেলযুক্ত বা নিষিদ্ধ ইঞ্জেকশন ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে গরু ছাগল মোটা তাজা করণ করছেন তারা। আর এ জন্য পশুদের খাওয়ানো হচ্ছে হাওরের ঘাস, খইল, ভূষি, কচুরিপানাসহ দেশীয় সব খাবার। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বলছে, এবার জেলায় যে পরিমান কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে তা স্থানীয়ভাবে লালন পালন করা পশুতেই মিটে যাবে। 

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দেয়া তথ্য মতে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলায় ছোট বড় প্রায় ৬ হাজার ৫শটি খামার গড়ে উঠেছে। আর এসব খামারে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা হচ্ছে ৬০ হাজার গবাদি পশু। এর মধ্যে রয়েছে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ। এছাড়াও পরিবারিকভাবে আরও লালন পালন করা হয়েছে ৩৫ হাজার গবাদি পশু। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে জানা যায়, জেলায় এবার কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৯০ হাজারের মতো। যার ফলে স্থানীয়ভাবে লালন পালন করা পশুতেই মিটবে এবারের কোরবানির চাহিদা। এদিকে খামারিরা বলছেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে অবৈধভাবে গরু না আসলে এবার লাভবান হবেন তারা। 

সরেজমিনে বেশ কয়েকটি খামার ঘুরে দেখা যায়, কেরবানির ঈদে বিক্রির জন্য খামারের শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং যত্ন নিচ্ছেন গবাদি পশুগুলোর। নিয়মিত হাওরের ঘাস, গমের ভূষি, মসুর ডালের ভূষি, ধানের কুড়া, ফিড, খৈল, ধানের খড়সহ নানা ধরণের খাবার দিচ্ছেন পশুগুলোকে। এছাড়াও সৌন্দর্য বাড়াতে প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার করানো হচ্ছে গোসলও। এর মধ্যে জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর ইউনিয়নের নসরতপুরে একটি খামারে গিয়ে দেখা মিলে ২৯ মন ওজনের একটি ‘কালো মানিকের’। যার দাম চাওয়া হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা। বিশাল আকৃতির ফিজিয়ান জাতের এই ষাড়টি মাত্র ৪ বছর বয়সী। যার দৈর্ঘ ৭৭ ইঞ্চি ও প্রস্থ প্রায় ১০০ ইঞ্চি।

খামারি পারুল বেগম জানান, তিনি নিজেই খামারটি পরিচালনা করছেন। তাদের খামারে ‘কালো মানিক’ ছাড়াও ছোট বড় আরও অন্তত অর্ধশতাধিক গরু রয়েছে। তবে এর মধ্যে শখের গরু হচ্ছে ‘কালো মানিক’। গরুগুলোকে এবারের ঈদ বাজারে তোলার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ৪ জন শ্রমিক দিনরাত গরুগুলোর প্রতি যত্ন নিচ্ছে। কালো মানিক বিষয়ে তিনি বলেন, উপযুক্ত দাম পেলে তিনি ‘কালো মানিক’কে বিক্রি করে দিবেন। 

এগ্রো ফার্মের খামারি রুবেল আহমেদ জানান, তিনি কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রায় শতাধিক ছোট বড় গরু লালন পালন করে আসছেন। সবগুলোই গরু তিনি ঈদ বাজারে বিক্রির আসা করছেন। 

তিনি বলেন, এখন যেহেতু গরুর খাবারের দাম বেশি তাই গরুর দামও কিছুটা বাড়বে। তবে সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা গরুর চাহিদা বাজারে বেশি। এজন্যই তিনি কোন ধরণের ইঞ্জেকশন ছাড়াই গরুগুলোর পরিচর্যা করছেন। রুবেল বলেন, তার খামারে ৮০ হাজার থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত দামের গরু রয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এবার জেলায় ৫০ থেকে ৫৫টি স্থায়ী এবং অস্থায়ী হাট বসবে। এখনও পর্যন্ত বাজারে কেনা-বেচা তেমন শুরু না হলেও আগামী ক’দিনের মধ্যেই জমজমাট কেনা বেচা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়াও বাজারে যাতে করে কোন ধরনের অসুস্থ গরু বিক্রি না হয় সে জন্য মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করবে। 

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর