১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৪:৫৪

ডায়রিয়া ও কিডনি রোগের সম্পর্ক

ডা. সহেলী আহমেদ সুইটি

ডায়রিয়া ও কিডনি রোগের সম্পর্ক

বিশ্বে কিডনি রোগ একটি মারাত্মক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও ঠিক একইভাবে কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। দেশে প্রায় ২ কোটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে ভুগছেন। প্রতি বছর ৩৫ হাজার রোগী কিডনি বিকল হয়ে মারা যাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি সংশ্লিষ্ট রোগ শনাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে কিডনি বিকল হওয়ার হার কমানো সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন সচেতনতা এবং কিডনি রোগ শনাক্তকরণ কাজ। আমাদের অনেকেরই হয়তো জানা নেই ডায়রিয়া থেকেও আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। কারণ ডায়রিয়া হলে পানিশূন্যতা হয়, যা কিডনি বিকলও করতে পারে।

তবে আশার কথা এই যে, আকস্মিক কিডনি বিকল হলে দ্রুত কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে রোগীকে সম্পূর্ণ সুস্থ করা সম্ভব। সাধারণ মানুষের জন্য পরামর্শ হলো, ডায়রিয়া হলে যাতে পানিশূন্যতা না হয় সে জন্য সচেতন হতে হবে। পানিশূন্যতা রোধে পর্যাপ্ত পানি এবং স্যালাইন পান করতে হবে। ডাবের পানিও উপকারী। ডায়রিয়া হলে লবণ অর্থাৎ ইলেকট্রোলাইটসেরও অসামঞ্জস্যতা দেখা যেতে পারে। তাই অবশ্যই খাবার স্যালাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা শরীরের পানিশূন্যতা কাটিয়ে লবণের ঘাটতি রোধেও সহায়তা করে। ডায়রিয়া হলে খেয়াল রাখতে হবে প্রস্রাব কম বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিনা, বমি বা বমি ভাব হচ্ছে কিনা। মুখ বা চোখের নিচে অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাচ্ছে, রক্তচাপ কমে যাচ্ছে, হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে, শরীর দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়ে নেতিয়ে যাচ্ছে_ এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে কিডনি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। শুধু রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমেই আপনি জেনে নিতে পারবেন আপনার কিডনি বিকল হয়েছে কিনা। শুধু ডায়রিয়াই নয়, অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া প্যারাসিটামল বা অন্যান্য ব্যথানাশক ওষুধ এবং এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের কারণেও আকস্মিক কিডনি বিকল হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ এবং এন্টিবায়োটিক ব্যবহার উচিত নয়। অন্যদিকে উচ্চ রক্তচাপ এবং কিডনি রোগে একটি আরেকটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত অর্থাৎ যারা দীর্ঘদিন উচ্চরক্তচাপে ভুগছেন তাদের কিডনি বিকল হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। ঠিক একইভাবে যারা দীর্ঘদিন কিডনি বিকল রোগে ভুগছেন তাদের উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। কিডনি রোগের উপসর্গ দুই ভাবে প্রকাশ পায়। একটি আকস্মিকভাবে অন্যটি ধীরগতিতে। ধীরগতির লক্ষ্মণগুলো হলো- প্রস্রাব কম হবে, বমি বমি ভাব হবে ও শরীর দুর্বল হয়ে যাবে। এছাড়া রক্তশূন্যতা ও উচ্চ রক্তচাপের প্রভাবও থাকবে। চেহারা ফুলে যেতে পারে। এমনকি প্রস্রাবের সঙ্গে প্রতিনিয়ত প্রোটিন নির্গত হবে। এ কারণে শুধু প্রস্রাব পরীক্ষা করেও কিডনি রোগের ধারণা পাওয়া যায়। আর আকস্মিক উপসর্গের মধ্যে যেটা লক্ষণীয় সেটা হলো হঠাৎ করে প্রস্রাব বন্ধ হওয়া।

 

বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

সর্বশেষ খবর