মাসল ক্রাম্প বলতে বুঝায় মাংসপেশির ব্যথাপূর্ণ সংকোচন বা মাংসপেশি হঠাৎ শক্ত হয়ে যাওয়া, যা কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। সাধারণত বা সচরাচর এটি পায়ের মাংসপেশিতে ঘটে থাকে। রাতের বেলা সাধারণত পায়ের ডিম বা কাফ মাসল হঠাৎ সংকুচিত হয়, কিংবা অনেকটা শক্ত হয়ে যায়। এছাড়া কখনো কখনো ঊরু বা পায়ের পাতার পেশি সংকুচিত হতে পারে। এমনকি ঘুমের মধ্যে কিংবা জেগে থাকা অবস্থায়ও এসব হতে পারে।
মাসল ক্রাম্প কীভাবে বন্ধ করবেন : মাসল ক্রাম্প এক অসহনীয় অবস্থা। এসময়ে পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। যন্ত্রণায় ছটফট করেন অনেকে। হঠাৎ মাসল ক্রাম্প শুরু হলে সেটি বন্ধ করতে আপনি বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন-
মাংসপেশি প্রসারিত করুন ও ম্যাসাজ করুন।পেশি রিল্যাক্স করতে গরম পানিতে গোসল করুন বা সংকুচিত পেশিতে গরম পানি ঢালুন। পেশিতে গরম প্যাড রাখলেও উপকার পাবেন।
বরফ অথবা কোল্ড প্যাক ব্যবহার করে দেখুন। তবে বরফ খণ্ডটি অবশ্যই একটি কাপড়ে মুড়ে নেবেন।
নিচের যে কোনো একটি ব্যথার ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন খেতে পারেন। তবে ওষুধ গ্রহণের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন। ওষুধের ব্যবহার বিধি ও নির্দেশ মাত্রা পড়ে নিবেন ও মেনে চলবেন।
যদি আপনার ডাক্তার মাসল ক্রাম্পের ওষুধ প্রেসক্রাইবড করেন তাহলে তার প্রেসক্রিপশন পুরোপুরি মেনে চলুন। ওষুধে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই ডাক্তারকে অবহিত করুন।
প্রচুর পানি পান করুন। কিছু স্পোর্টস ড্রিংকস রয়েছে সেগুলো পায়ের পেশির ক্রাম্পে বেশ উপকারী।
নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন-
কাছাকাছি জায়গায় হাঁটুন, অথবা পায়ে ঝাঁকি দিন।
আপনার কাফ মাসল প্রসারণ করুন। আপনি বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় এটি করতে পারেন। যখন বসে থাকবেন, আপনার পা সোজা করুন এবং পায়ের আঙুলগুলো ওপরের দিকে রেখে পাতা বাঁকিয়ে আপনার হাঁটুর দিকে আনুন। এ ক্ষেত্রে আপনি পায়ের তলায় একটি তোয়ালে দিয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু সোজা রেখে তোয়ালের দুই প্রান্ত ধরে ধীরে ধীরে আপনার নিজের দিকে টানতে পারেন।
যখন দাঁড়াবেন, দেয়াল থেকে দুই ফুট সামনে দাঁড়ান। দেয়ালের দিকে সামনে ঝুঁকে দাঁড়ান। আক্রান্ত পায়ের হাঁটু সোজা রাখুন এবং গোড়ালি মাটিতে রাখুন। এ সময়ে অন্য পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে রাখুন।
যদি মনে হয় যে কোনো ওষুধের কারণে মাসল ক্রাম্প হচ্ছে তাহলে নিচের বিষয়গুলো মেনে চলুন-
ওষুধের আরেকটি ডোজ গ্রহণের আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। উক্ত ওষুধ বন্ধ করার কিংবা পরিবর্তন করার অথবা ডোজ ঠিক করার প্রয়োজন হতে পারে।
যদি চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন, তাহলে ওষুধটি বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক : ভাইস-প্রিন্সিপাল, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ