রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২ ০০:০০ টা

তরুণীরাও হৃদরোগের ঝুঁকিতে!

ডা. এম. শমশের আলী

তরুণীরাও হৃদরোগের ঝুঁকিতে!
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশসহ সমগ্র ভারতবর্ষে তরুণী বা যুবতী মেয়েদের মধ্যে হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব অধিক হারে পরিলক্ষিত হচ্ছে। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের শারীরিক যোগ্যতার তারতম্যের জন্য খাদ্যের প্রয়োজন কিছুটা কম। বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশে খাদ্যবস্তুর প্রতুলতা, মেয়েদের বাইরে কাজ করার প্রবণতা, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুডে খাওয়ার আগ্রহ বোধ, কায়িকশ্রমের অভাব, সর্বোপরি চহিদার তুলনায় মেয়েদের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াতে অল্প বয়সে মেয়েরা বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতার শিকার হচ্ছে। যেমন_ উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল, স্থূলতা ও ওজন আধিক্য, ডায়াবেটিস, বিষণ্নতা, অনিদ্রা, মানসিক ও স্নায়বিক অসুস্থতার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব মহিলা খুব কম কায়িকশ্রম করতে অভ্যস্ত, যাদের শারীরিক ওজন বেশি, জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ গ্রহণ করেন, বাইরে জাংফুড (ফাস্টফুড) খেতে খুব বেশি পছন্দ করেন, যাদের নিকট আত্মীয় কারও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল এ ধরনের ইতিহাস আছে তাদের ক্ষেত্রে ২০ বছর বয়সের পর থেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া এবং বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত পরামর্শ, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ঝুঁকি নির্ণয় করে চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে উপরোক্ত অসুস্থতাকে মোকাবিলা করা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয়। গর্ভধারণ করা মহিলাদের একটি সর্বোচ্চ জৈবিক যোগ্যতা। গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন সময়ে মহিলারা অনেক বেশি স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি মোকাবিলা করে থাকেন। কাজেই এর জন্য পূর্ব প্রস্তুতি ও সতর্কতা অত্যাবশ্যক। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মতো জটিল অসুখ-বিসুখে আক্রান্ত মহিলারা গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভাবস্থায় মেডিকেল স্পেশালিস্ট/হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থাকবেন। আমাদের দেশে যেসব মহিলা বাল্যকালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বড় হয়েছেন তাদের মধ্যে বাতজ্বরজনিত সমস্যা, বাতজ্বরের জটিলতা হিসেবে হৃৎপিণ্ডের ভাল্বের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যেসব তরুণী স্বাভাবিক অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের উপসর্গে ভুগছেন তাদের জন্য হৃদরোগের উপসর্গ সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। কারণ বর্তমান বিশ্বে হৃদরোগকে প্রধান প্রাণঘাতী রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তরুণীদের হৃদরোগের লক্ষণসমূহ : খেলতে গেলে, দৌড়াদৌড়ি করলে, অনেকক্ষণ ধরে শক্তি প্রয়োগের কাজ করতে থাকলে, অন্যদের চেয়ে বেশি ক্লান্ত হয়ে গেলে, হাত-পায়ের মাংসপেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, কাজে অমনযোগিতা, মাথা ব্যথা হওয়া, উপরের পেটে ব্যথা অনুভূত হওয়া, বমি বমি ভাব থাকা অথবা দুর্বলতা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া দরকার যে হৃৎপিণ্ডের কোনো সমস্যা আছে কি না? লেখক : সহকারী অধ্যাপক ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ফোন : ০১৯৭১-৫৬৫৭৬১

সর্বশেষ খবর