শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩ ০০:০০ টা

রমজান ও ডায়াবেটিক রোগী...

ডা. কামাল পাশা

রমজান ও ডায়াবেটিক রোগী...

পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখা বিশ্বের সব সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য ফরজ। মনে রাখতে হবে, ইসলাম ধর্ম অসুস্থ ব্যক্তির রোজা রাখাকে অনুমোদন দিয়েছে। ধর্মীয় পণ্ডিত ব্যক্তিরা বলে থাকেন, একজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যখন যথাযথভাবে যাচাই করে মতামত দিয়ে থাকেন যে, রোজা রাখলে কারও সে ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে (অসুস্থতা বেড়ে যাওয়া কিংবা জীবন সংকটাপন্ন হওয়া) তাহলে সেই ব্যক্তি রোজা রাখা থেকে মাফ পেতে পারেন।

ডায়াবেটিক রোগী ও রোজা : যাদের ডায়াবেটিস 'ভালো' নিয়ন্ত্রণে থাকে তাদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়; কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত, তারা ক্ষেত্রবিশেষে কিছু সমস্যা বা ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন। ঝুঁকিগুলো মূলত তিন ধরনের।- ক. রক্তে গ্লুকোজ অনেক কমে যাওয়া (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) শতকরা চার থেকে আট শতাংশ রোজা পালনকারী ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এটি হতে পারে। খ. রক্তে গ্লুকোজ অনেক রোগী বেড়ে যাওয়া (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) অন্য সময়ের তুলনায় রমজান মাসে রোজা পালনরত ঝুঁকিপূর্ণ ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এই জটিলতা হওয়ার হার প্রায় পাঁচগুণ বেশি। গ. পানিশূন্যতা : এবারের রমজান মাসে দিন অনেক বড় হওয়ায় এই জটিলতা হওয়ার আশঙ্কা একটু বেশি। এর ফলে রক্তের ঘনত্ব বেড়ে গিয়ে রক্ত জমাটবাঁধার প্রবণতা বাড়তে পারে এবং এতে হার্ট, মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাহলে যারা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না তারা কি রোজা রাখবেন না?

এর সোজাসুজি কোনো উত্তর নেই। যেটা করতে হবে তা হলো : সব ডায়াবেটিক রোগীকেই রমজানের অন্তত তিন মাস আগে থেকেই নিয়মিত তাদের চিকিৎসকের কাছে আসতে হবে- যাতে তার ডায়াবেটিসের অবস্থাটি জানা যায় এবং তা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায়। অর্থাৎ রোজা শুরুর অনন্ত মাসখানেক আগে থেকেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে একজন ডায়াবেটিক রোগী তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন এবং সেটি বজায় রাখতে পারেন, তবেই তিনি মোটামুটিভাবে ঝুঁকি এড়িয়ে রোজা পালন করতে পারবেন। সুতরাং উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।

লেখক : এসোসিয়েট কনসালট্যান্ট, হৃদরোগ বিভাগ

স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা। ফোন : ০১৯১৭-২৬৯৭০০

০১৯১৭-২৬৯৭০০

 

 

সর্বশেষ খবর