শনিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৩ ০০:০০ টা

লাফটার ইজ দ্য বেস্ট মেডিসিন

অধ্যাপক ডা. মো. আবু সিদ্দিক

লাফটার ইজ দ্য বেস্ট মেডিসিন

কথায় বলে 'লাফটার ইজ দ্য বেস্ট মেডিসিন'- অর্থাৎ হাসি হলো সর্বোত্তম ওষুধ। বাংলাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় হাসিকে নানাভাবে বিভাজন করেছে। যেমন- ইংরেজি ভাষায় Smile মানে মৃদু হাসি। মোনালিসার হাসিকে Smile বলা যায়। আর Laughter কে বলে উচ্চহাসি বা অট্টহাসি। বাংলা, হিন্দি ছবির ভিলেনরা যেমন হাসেন। বাংলা ভাষায়ও হাসিকে নানাভাবে বিভাজন করা হয়েছে। যেমন- মৃদু হাসি, বক্র হাসি, অট্টহাসি ইত্যাদি। এখন কথা হলো- ইংরেজি প্রচলিত কথাটি ‘Laughter is the best medicine’ কতটা সত্যি। মার্কিন গবেষকদের মতে, হাসি মানুষের হার্ট বা হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু হৃৎপিণ্ড নয়, মানুষের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতেও হাসির বিশেষ অবদান রয়েছে। আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি পরিচালিত দুটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিনের হাসি ও উৎফুল্লতা মানুষের হৃৎপিণ্ড সবল রাখতে ব্যায়ামের মতোই কাজ করে। হাসি মানুষের রক্ত সংবহন তন্ত্রকে অর্থাৎ রক্তনালিতে রক্ত চলাচল কার্যকর রাখতেও সহায়তা করে। তবে একথা বলছি না যে, ব্যায়াম ছেড়ে শুধু হাসুন। আমাদের কথা হলো, প্রতিদিন আপনি পরিমিত ব্যায়াম করুন। খাদ্য তালিকায় সুস্থ খাবার রাখুন। প্রতিদিনই হাসার চেষ্টা করুন। মেরিল্যান্ড ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের ডা. মাইকেল মিলার বলেন, সপ্তাহে ৩০ মিনিট করে তিনবার ব্যায়াম এবং প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে হাসি আপনার হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী। হাসি হার্টের জন্য ব্যায়ামের মতো কাজ করে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, হাসলে ওজন কমে। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন, নিয়মিত জিমে গিয়ে বা উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ করে যতটা ওজন কমানো সম্ভব ততটা না হলেও ১০-১৫ মিনিটের প্রকৃত হাসি একটি মাঝারি আকৃতির চকলেট জাতীয় খাবারের সমপরিমাণ ক্যালরি ধ্বংস করে। মাসিয়েজ বুচোত্তাকী নামক এক গবেষক প্রমাণ করেছেন, দিনে ১০-১৫ মিনিটের হাসি ৫০ ক্যালরি পর্যন্ত পোড়াতে সক্ষম। তবে তা শরীরের গঠন ও হাসির মাত্রার ওপর নির্ভর করে। প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট হাসির মাধ্যমে বছরে প্রায় সাড়ে চার পাউন্ড বা দুই কেজি ওজন কমানো সম্ভব। তবে তা জোর করে বা মুচকি হাসি হলে চলবে না। হতে হবে প্রাণখোলা হাসি। আসুন আমরা প্রতিদিন প্রাণ খুলে হাসতে চেষ্টা করি এবং সুস্থ থাকি।

লেখক : অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, কার্ডিওলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

 

 

সর্বশেষ খবর