সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

শীতকালীন রোগবালাই

অধ্যাপক ডা. একেএম মোস্তফা হোসেন

শীতকালীন রোগবালাই

আবহাওয়ায় শুরু হয়েছে ঋতু পরিবর্তনের খেলা। পাওয়া যাচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শীতকালে শুকনা আবহাওয়ায় বায়ুবাহিত/ফুসফুসের রোগই বেশি। যেমন : সাধারণ সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ/এআরআই শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত অ্যালার্জিক রোগ। যেমন : বিভিন্ন ধরনের অ্যাজমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। এছাড়া জলবসন্ত, যক্ষা, খোসপাঁচড়া ইত্যাদি।

জলবসন্ত : এক ধরনের ভাইরাস এ রোগ সৃষ্টি করে। এটি একটি সংক্রমক রোগ। আক্রমণের ফলে রোগী কষ্ট পায় কিন্তু আশার কথা হলো এতে মৃত্যুঝুঁকি নেই।

লক্ষণসমূহ : গায়ে অল্প অল্প জ্বর ও প্রচণ্ড ব্যথা। দুই-তিন দিন পর প্রথমে বুকে ও পিঠে গুটি বা ফুসকুড়ি দেখা দেয়, আস্তে আস্তে সারা দেহে গুটি বের হয়, গুটি নরম ও এর ভিতরে পানির মতো এক প্রকার তরল পদার্থ থাকে। কয়েকদিনের মধ্যে গুটি বা ফুসকুড়িগুলো বেশ চুলকায়। যা অনেকটা অস্বস্তিকর।

প্রতিকার : নখ দিয়ে গুটি বা ফুসকুড়ি চুলকানো উচিত নয়। এ অবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর চিকিৎসা করতে হবে।

প্রতিরোধ : রোগীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে। রোগীর ব্যবহার করা থালা-বাসন, বিছানাপত্র অন্য কেউ ব্যবহার করবে না। রোগীর ব্যবহার করা বিছানাপত্র সোডা মিশ্রিত পানিতে সিদ্ধ করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।  রোগী সুস্থ হওয়ার পরও দুই-তিন সপ্তাহ বাইরে যাওয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

যক্ষা : মারাত্মক বায়ুবাহিত সংক্রামক রোগ। একে টিবি বা যক্ষারোগ বলে।  ব্যাকটেরিয়া এ রোগ সৃষ্টি করে।

লক্ষণ : তিন সপ্তাহের রোগী সময় পর্যন্ত কাশি হয়।

বিকালের দিকে অল্প অল্প জ্বর ও রাতে ঘাম হয়। ক্রমাগত ওজন কমে যায় ও শরীর

দুর্বল হতে থাকে। বুকে-পিঠে

উপরের দিকে ব্যথা হয়।

প্রতিকার : উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে, যক্ষারোগীর প্রতি বিশেষ যত্ন নিতে হবে। চিকিৎসা করালে ও পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে যক্ষারোগ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়।

বিস্তার রোধ : আক্রান্ত রোগীকে আলো-বাতাসপূর্ণ আলাদা ঘরে রাখতে  হবে। রোগীর  কফ  বা থুতু মুখবন্ধ কৌটায় ফেলতে হবে এবং মাটিচাপা দিতে হবে। এ রোগে ছয় মাস বা তারও বেশি সময় পর্যন্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। ডাক্তারের

পরামর্শ ছাড়া ওষুধ ছাড়া

যাবে না। আগে এ রোগের সঠিক চিকিৎসা

ছিল না। বর্তমানে চিকিৎসা আছে।

প্রতিরোধ : প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হয়েছে। জন্মের পর থেকে এক বছরের মধ্যে টিকা দেওয়া যায়।

লেখক : বক্ষব্যাধি ও অ্যাজমা বিশেষজ্ঞ,

মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর