শিরোনাম
শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইজতেমা মুসল্লিদের স্বাস্থ্যকথা

ডা. সজল আশফাক

ইজতেমা মুসল্লিদের স্বাস্থ্যকথা

টঙ্গীর তুরাগ তীরে গতকাল বাদ ফজর আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। শীত ও যানজট উপেক্ষা করে ইতোমধ্যে লাখ লাখ মুসল্লি বাস, ট্রাক, পিক-আপ, লঞ্চ ও ট্রেনে করে জমায়েত হয়েছেন ইজতেমার ময়দানে। আসছেন এখনো। পথে পথে মুসল্লির ঢল। মাথায় ও কাঁধে ব্যাগ, হাঁড়ি-পাতিলসহ প্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী। বিশ্ব ইজতেমা মুসলমানদের একটা বড় জমায়েত। শীতকালে এবং খোলা মাঠে ইজতেমা হওয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি কিছুটা বেশি।  তবে এসব স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রায় সবই প্রতিরোধ করা কিংবা এড়ানো সম্ভব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে। প্রয়োজনীয় কিছু সতর্কতামূলক সাধারণ ব্যবস্থাগুলো হলো— অদম্য আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ইজতেমার উদ্দেশে যাত্রা করার প্রাক্কালে একজন মুসল্লির কাছে কোনো কিছুকেই আর বাধা মনে হয় না। এই মানসিকতার বশবর্তী হয়ে অনেকে অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়েন। যার ফলে দেখা যায়, যাত্রার আগেই ক্যাম্পে তিনি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ছেন। এটা কখনোই কাম্য নয়। তাই শুরুতেই শক্তি সঞ্চয়ের জন্য ধীরস্থির থাকতে হবে। অহেতুক ছোটাছুটি এখানে কাম্য নয়।

* পানি স্বল্পতাজনিত ঝুঁকি এড়াতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। রাতে ভ্রমণ করতে হবে। কিছুটা লবণাক্ত খাবার এ সময়ে দরকার হয়, ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়া লবণের ঘাটতি মেটানার জন্য।

* শরীরের পানিস্বল্পতা এড়াতে সঙ্গে বিশুদ্ধ খাবার পানি রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে সৃষ্ট শারীরিক অবসাদ কাটাতে খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে।

* বেশির ভাগ মুসল্লি গলাব্যথা, কাশি, ঘনঘন হাঁচি, সর্দি এবং জ্বরে ভুগে থাকেন। হঠাৎ পরিবেশ পরিবর্তনের জন্য এমনটি হয়ে থাকে। এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সাধারণ কিছু ওষুধপত্র যেমন— ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল, হাঁচি-সর্দির জন্য ফেক্সোফেনাডিন জাতীয় ওষুধ, কাশির জন্য এডোভাস সিরাপ কিংবা সিনেকড ট্যাবলেট গ্রহণ করা যেতে পারে। এগুলো অল্প করে সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই ভালো।

* ইজতেমার উদ্দেশে বের হওয়ার পর থেকে মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত। কারণ এই দিনগুলোতে সুষম খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে। সেই ঘাটতি পূরণে প্রতিদিনই মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করা উচিত।

* যদি কারও অ্যাজমা-হাঁপানি থাকে তখন অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে

পথে কীভাবে চলতে হবে সে বিষয়ে সম্যক ধারণা ও প্রস্তুতি থাকতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে হাঁপানির প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো।

* এ সময় হাঁটতে হয়। কাজেই হাঁটার প্রস্তুতি নিতে হবে। হঠাৎ অতিরিক্ত হাঁটার কারণে পায়ের মাংসপেশিতে খিল ধরতে পারে কিংবা কিছুটা ব্যথা হতে পারে।

* এছাড়া যারা চশমা ব্যবহার করেন, অতিরিক্ত একজোড়া বাড়তি চশমা তাদের সঙ্গে নেওয়া উচিত।

* অন্যদিকে ইজতেমায় সবাই একসঙ্গে বসবাস করেন। এ সময় ব্যক্তিগত বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করার চেষ্টা করতে হবে।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর