শিরোনাম
শনিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

হূদরোগ ও মেডিটেশনের সম্পর্ক

অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস

হূদরোগ ও মেডিটেশনের সম্পর্ক

জন্মকালে মানবদেহের ধমনী সম্পূর্ণভাবে বাধাহীন থাকে। ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা এবং প্রসারণ মাত্রাও থাকে উঁচু। হূদযন্ত্রের প্রতিটি পাম্পের সঙ্গে এর সংযোগ থাকে অবাধ। প্রাণশক্তি ও অক্সিজেনে ভরপুর রক্তধারা সঞ্চালিত হয় দেহের প্রতিটি কোষে ও কলায়। যার ফলে দেহের সর্বত্র ক্রমাগতভাবে রাসায়নিক ক্রিয়া চলতে থাকে। শিশু সন্তান বেড়ে উঠে প্রাপ্তবয়স্ক হয় প্রাকৃতিক নিয়মে। কালে কালে লিড, ক্যাডমিমাম বা অ্যালুমিনিয়ামের মতো ভারী ধাতুর দ্বারা ধমনীতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে কথিত রাসায়নিক ক্রিয়া বহুলাংশে হ্রাস পায়। কোলেস্টেরলের মতো মেদজাতীয় উপাদান ক্যালসিয়াম কণার সঙ্গে যুক্ত হতে শুরু করে। ধমনীর ভিতরে এভাবেই সূচনা হয় প্লাকের বা অবরোধের। যা মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠে হূদযন্ত্রের জন্য। স্বাভাবিক রক্তচলাচলের পথে এই অবরোধ সৃষ্টির কারণেই হার্ট অ্যাটাক হয়। বিশ্বের এক নম্বর মরণব্যাধি হূদরোগ। কোনোরকম পূর্বাভাস ছাড়াই যে কোনো সময় এটি কেড়ে নিতে পারে মানুষের জীবন। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন তেমনি রোগাক্রান্ত হলে প্রয়োজন চিকিত্সার। হূদরোগের চিকিত্সা হিসেবে প্রচলিত বহুল আলোচিত দুটি পদ্ধতি বাইপাস ও স্ট্যান্টিং। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেক রোগী অপারেশন করাতে ভয় পান। এছাড়া অনেক সময় ডাক্তাররা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়ে দেন যে, রোগীর বাইপাস সার্জারি বা স্ট্যান্টিং করার মতো অবস্থা নেই বা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আবার এমনও দেখা গেছে, ৮০ বছরের বৃদ্ধের একটি আর্টারিতে ব্লক থাকায় রিং বসাতে গিয়ে অসফল বা ব্যর্থ। তাকে এই বয়সে বাইপাস করা রিস্ক অথবা রোগীও এই বয়সে অপারেশন করাতে অনিচ্ছুক। এসব রোগীর কথা মাথায় রেখে চিকিৎসকরা লাইফস্টাইল ও মেডিটেশনের ওপর জোর দিয়ে তাদের আশ্বস্ত করছেন। হূদরোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ে মেডিটেশন এবং লাইফস্টাই-লভিত্তিক

চিকিত্সা পদ্ধতি এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। কেবল হূদরোগ চিকিত্সায়ই নয়, অসংক্রামক বহু রোগ বিশেষত উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, মাইগ্রেন রোগের চিকিত্সায় এই পদ্ধতির সাফল্য আজ পরীক্ষিত। সুতরাং জোর দিতে পারেন মেডিটেশনের ওপর।

লেখক : অধ্যাপক, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং সিইও, হলিস্টিক

হেলথ কেয়ার, পান্থপথ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর