ব্যায়াম করা বা শরীরটা একটু ঘামিয়ে নেওয়া যতই অপছন্দের হোক না কেন সুস্থ থাকতে এর কোনো বিকল্প নেই। ওয়ার্কআউট যদি একান্তই ভালো না লাগে সেক্ষেত্রে যোগাসন তো আছেই। ওজন কমানো, শক্তিশালী নমনীয় শরীর, উজ্জ্বল ত্বক, শান্ত মন, ভালো স্বাস্থ্য ইত্যাদি যা কিছু আমরা পেতে চাই সব কিছুর দাওয়াই আছে যোগাসনে। এতে অনেক রকম শারীরিক সমস্যা যথা উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, করোনারি আর্টারি ব্লকেজ ইত্যাদি রোগ থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং শারীরিক, মানসিক ও সুস্থ জীবন কাটানো সম্ভব। যোগ হলো এক জীবনদর্শন, যোগ হলো আত্মানুশাসন, যোগ হলো এক জীবন পদ্ধতি, যোগ হলো ব্যাধিমুক্ত এবং সমাধিযুক্ত জীবনের সংকল্পনা। যোগ শুধু  চিকিৎসা পদ্ধতিই নয়, বরং যোগের প্রয়োগ ব্যাধিকে নির্মূল করে। এটি এক বিধাতা প্রদত্ত শুধু শরীরেরই নয়, সমস্ত মানসিক রোগেরও চিকিৎসা শাস্ত্র।

যোগ অ্যালোপ্যাথির মতো কোনো লাক্ষণিক চিকিৎসা নয়, বরং রোগের মূল কারণকে নির্মূল করে আমাদের ভিতর থেকে সুস্থ করে তোলার এক উপায়। নিয়মিত যোগাভ্যাসের অসংখ্য উপকারিতার মধ্যে কয়েকটি—

স্ট্রেস কমায় : সারা দিনের কাজের চাপে আমরা সবাই কমবেশি কাহিল হয়ে পড়ি। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পর ক্লান্ত লাগে। অনেক সময়ই মেজাজ খারাপ থাকে। এর কারণ স্ট্রেস। শারীরিক এবং মানসিক দুভাবেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। যোগাসন এর থেকে মুক্তি দেয়। যোগাসন, প্রাণায়াম এবং ধ্যান করে স্ট্রেসকে দূরে রেখে প্রাণোচ্ছ্বল জীবনযাপন করা সম্ভব।

মানসিক শান্তি : মানসিক শান্তি কে না চায়? মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য আমাদের কতই না প্রচেষ্টা। আমরা সুন্দর জায়গায় ঘুরতে যাই, ভালো গান শুনি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে সময় কাটাতে চাই তবে নিয়মিত মানসিক শান্তি এত কিছু করার দরকার নেই।

প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : নিয়মিত যোগাভ্যাস আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চারদিকের দূষণ নানারকম জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে এবং ক্ষতি করার চেষ্টা করছে।

এনার্জি বাড়ায় : দিন শেষে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। বাড়ি ফেরার পর এনার্জি অবশিষ্ট থাকে না। মাত্র কয়েক মিনিটের যোগাভ্যাস কিন্তু সারা দিনের পরও এনার্জির জোগান দেবে। ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ যোগাসন করলে কাজের ফাঁকেও ফ্রেশ আর এনার্জেটিক থাকা যাবে। তাই যোগ অভ্যাসে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।

অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র দাস, সিইও, হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টার, স্কাইচাট রাজকোষ, পান্থপথ, ঢাকা।